মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে সংকুচিত হচ্ছে বৈশ্বিক তেলের বাজার, জানিয়েছে বিশ্ব জ্বালানি সংস্থা
নূর মাজিদ : গতকাল বৃহ¯পতিবার এই তথ্য জানায় আইইএ। সংস্থাটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের জ্বালানিবাজার পর্যবেক্ষণে এইখাতে একাধিক ঝুঁকির মাত্রা বাড়ছে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতার কারণে জ্বালানি তেলের বাজারদর স¤পর্কে অগ্রিম পূর্বাভাষ দেয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। এই দরবৃদ্ধির পেছনে অবদান রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি মজুদের পরিমাণ বৃদ্ধি। এবং ইরান ও ভেনেজুয়েলার ওপর আরোপিত মার্কিন তেল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা। এর আগে গতবছর শক্তিশালী হয়েছে ওপেক এবং তাদের সহযোগী বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়ার তেলের উৎপাদন কমিয়ে আনে। সবকিছু মিলিয়ে এই বাজারে মূল সরবরাহকারীদের মাঝে তেলের দর বাড়ানোর ইচ্ছে আর কোন গোপন বিষয় নয়। যার কারণে বাজারটির আকার এখন পরিণত হয়েছে কিছু মূল উৎপাদকের ইচ্ছে এবং তাদের রাজনৈতিক অভিসন্ধির হাসিলের অংশে । এখানেই মুখ্য ভূমিকা রাখছে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি। সিএনবিসি।
ওপেক ও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤েপর একটি পরিস্কার দ্ব›দ্ব বিদ্যমান। ট্রা¤প চান তেলের দর ৬০ ডলারের ঘরে থাকুক। তবে ওপেক চাইছে তেলের দর ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে উঠে আসুক। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী চলতি এপ্রিলেই এমন ইঙ্গিত দেন। এতকিছুর পরেও অবশ্য বিশ্বজ্বালানি তেলের বাজারদর রাতারাতি আকাশচুম্বী অবস্থানে পৌঁছেনি। এর অন্যতম প্রধান কারণ চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সংঘাতে বৈশ্বিক পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থা একটি নেতিবাচক অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বজ্বালানি সংস্থা (আইইএ) জানায়, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে আসলে নিশ্চিতভাবেই তেলের বাজারদর কমবে। যদিও লিবিয়ার সা¤প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির বিস্তার, ইরান এবং ভেনেজুয়েলার ওপর মার্কিন অবরোধ পরিস্থিতির অবসানে উদ্যমী নয় যুক্তরাষ্ট্র। তারা শুধু ওপেকের ওপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমেই তেলের দর কমিয়ে আনতে চায়। কিন্তু, এইক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়েও তাকে উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে রাজী করাতে পারেন নি ট্রা¤প।
সৌদি আরবের পাশাপাশি এখন আরব আমিরাত, কুয়েত এবং বাহরাইনের মতো উপসাগরীয় অঞ্চলের ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্ররা তেলের উৎপাদন কমানোর মধ্য দিয়েই নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ আদায়ের পথে হাঁটছে। বৃহ¯পতিবার প্যারিসভিত্তিক সংস্থা আইইএ’র বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলা হয়, ওপেক ও রাশিয়ার ২০১৮ সালের ভিয়েনা চুক্তি, এবং ইরান ও ভেনেজুয়েলার ওপর মার্কিন অবরোধ তেলের সরবরাহ কমে আসার জন্য দায়ী। এই সকল সঙ্কট সৃষ্টির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে। তাই বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে দেশটিকে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ নিতে হবে। সম্পাদনা : ইকবাল খান