পানিকে আশীর্বাদে পরিণত করার ব্যবস্থা নিতে হবে, বললেন প্রধানমন্ত্রী
ফাতেমা আহমেদ : বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পানি দিবস ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব পানি দিবস ছিলো গত ২২ মার্চ। কিন্তু দিনটি শুক্রবার থাকায় ১১ এপ্রিল দিবসটি পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘পানি সবার অধিকার, বাদ যাবে না কেউ আর’। জাগো নিউজ, সারাবাংলা, চ্যানেল আই অনলাইন
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা প্রশাসনসহ সব মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘পানি যেনো অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদ হয়, সে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা বদ্বীপ অঞ্চলে বসবাস করি। সে কারণে প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। প্রকৃতি যেমন নেয়, তেমন দেয়। আমরা তার কাছ থেকে কতোটুকু নিতে পারলাম সেটাই বড় কথা।’
দেশের সব নদী ড্রেজিং ও নৌপথগুলো চালু করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুকনা মৌসুমে আমাদের যাতে পানি থাকে তাই আমাদের সমস্ত নৌপথ গুলো ড্রেজিং করা। এবং নৌপথ গুলো আবার চালু করা।
এছাড়া বিশ্বে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যা নিয়ে বলেন, ‘সাগরে জাহাজ যায় বর্জ্য ফেলে। আবার অনেক সময় নদীতেও বর্জ্য ফেলে। তাই আমি অনুরোধ করবো যাতে নদীতে বর্জ্য না ফেলে। নদী দূষণ রক্ষার্থে সচেতন হতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নদী, খাল, বিল, পুকুর, ডোবা খনন করে পানি ধরে রাখতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে যেনো আমরা এই পানি ব্যবহার করতে পারি। শুধু ভ‚গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করলে চলবে না। বৃষ্টি ও বন্যার পানি সংরক্ষণ করতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশে পানির জন্য হাহাকার চলে। সুপেয় পানির খুব অভাব। সেসব দেশে আমরা পানি বিক্রি করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘এক লিটার পানি শোধন করতে অনেক টাকা খরচ হয়। আর আমরা সে পানি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কল ছেড়ে গায়ে সাবান মাখি, ব্রাশ করি আর সেভ চলে। এ জন্য মগ ব্যবহার করতে পারেন। আমি কিন্তু গোসলের সময় বালতি মগ ব্যবহার করি। সে কারণে সবাইকে বলবো পানি, বিদ্যুৎ যেনো হিসাব করে সবাই ব্যবহার করেন। তাহলে বিলও কম উঠবে। আপনাদের টাকাও সাশ্রয় হবে।
নদীশাসনের প্রবণতার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রয়োজনে অনেক নদীতে ব্রিজ তৈরি করি। আমাদের প্রবণতা থাকে নদী শাসন করার। ব্রিজটা যেনো ছোট হয়, সেজন্য নদীকে ছোট করা হয়। আমি এই মতের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে ভিন্নমত পোষণ করছি। নদীর স্বাভাবিক গতি যেনো অব্যাহত থাকে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্ষাকালে যখন বেশি পানি আসে, সেই পানিকে ধারণ করার জন্য বাফার জোন রাখতে হবে। সেভাবে পরিকল্পনা নেয়া উচিত। আমরা নদীকে বেঁধে ফেলি, কিন্তু নদী বাধ মানে না। সুনামি, সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা দেখেছি, পানির তোড়ে সবকিছু ভেসে যায়। তাই পানিকে বেঁধে না রেখে এর চলাচলের সুব্যবস্থা করে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শতবর্ষের বদ্বীপ সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। এছাড়াও ডেল্টা প্ল্যানের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত্র স্থায়ী কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান