৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট আসছে
সোহেল রহমান : আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট পেশ করা হবে আগামী ১৩ জুন। বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর হিসাব অনুযায়ী আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের মোট আকার হচ্ছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি আগামী অর্থবছরের জিডিপি’র ১৮ শতাংশ এবং চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার থেকে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
প্রসঙ্গত: চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে মূল বাজেটের আকার থেকে প্রায় ২১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা কাটছাঁট করা হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়। এ প্রেক্ষিতে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়াবে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের আকারের সঙ্গে তুলনা করলে আসন্ন বাজেটের প্রকৃত আকার বাড়বে ৮০ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আসন্ন বাজেটে এডিপি’র আকার প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এদিকে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটে এডিপি’র আকার ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। এটি ছিল বাজেটে প্রাক্কলিত জিডিপি’র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এডিপি’র আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
জানা যায়, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে দশটি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বাজেট মনিটরিং কমিটির প্রথম বৈঠকে চিহ্নিত এসব খাতের মধ্যে রয়েছেÑ মানসম্পন্ন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন; সার্বিক মানব সম্পদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড-এর সুফল প্রাপ্তির লক্ষ্যে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি; বিদ্যুৎ-জ্বালানি-সড়ক-রেলপথ ও বন্দরসহ সার্বিক ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা; কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন এবং কর্মসৃজন; তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারি সেবা প্রদানের আওতা সম্প্রসারণ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন; সামাজিক সুরক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ; জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন; বহির্বিশ্বের অর্থনৈতিক সুযোগের অধিকতর ব্যবহার; প্রবাস আয় বাড়ানো ও নতুন নতুন রফতানি বাজার অনুসন্ধান।
এছাড়া আসন্ন বাজেটে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে সরকার প্রণীত ‘রূপকল্প-২১’ বাস্তবায়নের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত বলে ঘোষণা করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিবর্তে প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের একজনকে পর্যায়ক্রমে সরকারি বা বেসরকারি চাকরি প্রদানে সরকারের পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।
অন্যান্যের মধ্যে আগামী বাজেটে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ শীর্ষক একটি নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় গ্রামের কাঁচা রাস্তা পাকা হবে, থাকবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা। অর্থাৎ শহরের মতো গ্রামের মানুষও সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পাবেন। এই কর্মসূচির আওতায় পরিবেশ সংরক্ষণেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। সম্পাদনা : ইকবাল খান