২০২৮ সাল নাগাদ বিশ্বের উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪ শতাংশ চাহিদা মেটাবে সৌরবিদ্যুৎ
নূর মাজিদ : বৃহৎ অর্থনীতিগুলোর পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও শক্তি উৎপাদন নীতি প্রণয়নের কারণেই এমনটি হওয়ার জোর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এখন পাওয়ার সেক্টরের বৈশ্বিক বাজারে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের চাহিদা এবং উৎপাদন তাই অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত, উন্নত দেশগুলোর চাইতে ভারত এবং চীনের মতো দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলো নবায়নযোগ্য উৎসের বিদ্যুৎ ব্যবহারের দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন নবায়নযোগ্য পাওয়ার স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে এই দেশগুলোয়। যার মধ্যে সবচাইতে বেশি বেড়েছে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের হার। বিশ্ব বাজার গবেষক একটি ওয়েবসাইট তাদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরে। ‘গ্লোবাল এনার্জি আউটলুক ২০০৮-২৮’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে ২০০৮ সাল থেকে বিশ্ব সৌর বিদ্যুৎ বাজারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০২৮ সাল নাগাদ এর অবস্থানের পূর্বাভাস। সূত্র: মার্কেটঅ্যান্ডরিসার্চ
প্রতিবেদনটিতে ২০২৮ সালে বৈশ্বিক বিদ্যুতের ৪ শতাংশই সৌরবিদ্যুৎ থেকে আসবে এমন ধারণা করার বেশকিছু কারণ রয়েছে। পরিবেশবান্ধব নীতিমালার পাশাপাশি চীন এবং ভারতের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো সোলার প্যানেল নির্মাণে ব্যাপক ভর্তুকি দেয়। যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে দেয়া সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে দেয়া সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি। ২০০৮ সালে মোট বৈশ্বিক উৎপাদনের ১৩ টেরাওয়াট আসতো সৌরবিদ্যুৎ থেকে। ২০১৭ সালে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭৫ টেরাওয়াটে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিল্পখাতে এই ধরণের বিদ্যুতের ব্যবহার কম হলেও, চাহিদাটা মূলত বাড়ছে আবাসিক খাতে। একসময়, দুর্গম গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সোলার প্যানেল দিতো ভারত সরকার। এখন শহরাঞ্চলেও বাড়তি চাহিদার কারণে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ছে। অনেক বেসরকারি স্কুল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এখন শহরেই সোলার প্যানেলের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে। যা তাদের জন্যেও আর্থিক সাশ্রয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। ফলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত দুই অংকের প্রবৃদ্ধি উৎপাদন অর্জন করবে এই ধরণের শক্তি উৎপাদনের বাজার।
তবে এখনো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারে সৌরবিদ্যুতের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এখনো এই দেশগুলোর ১শ কোটি মানুষ বিদ্যুতের আওতার বাহিরে রয়েছেন। এছাড়াও, প্রচলিত উপায়ে উৎপাদনে যেসব বাঁধার মুখে পড়তে হয়, যেমন বিশাল বিনিয়োগ, যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণ তার কোন ঝামেলা নেই সৌরশক্তির ব্যবহারে। নবায়নযোগ্য শক্তির বাকি আরো দুইটি উৎস যেমন বায়ু এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপুল পরিমাণ প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। সৌরশক্তি সেই তুলনায় একদম সহজলভ্য। যার কারণে বিক্রি বেড়েছে সোলার প্যানেলেরও। চলতি মাসেই প্রকাশিত ওপর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে এমএআর। সম্পাদনা : আনিস রহমান