১০০ দিনে ১৮ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
আসাদুজ্জামান সম্রাট : প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েই মন্ত্রিসভার পূর্ণমন্ত্রী এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের প্রথম ১০০দিনে তাঁর নেয়া ১৮টি উদ্যোগে প্রশংসায় ভাসছেন শ ম রেজাউল করিম। জনহয়রানি ও দুর্নীতির দাযে জর্জরিত একটি মন্ত্রণালয়ের ইমেজ ফিরিয়ে এনে জনবান্ধব করার ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলো খুবই কার্যকরী এবং সময়ের বিবেচনায় যুগান্তকারী বলে বিবেচিত হয়েছে।
বুধবার মন্ত্রী হিসেবে ১০০দিন পূর্ণ করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয় দফার মন্ত্রিসভা। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে তাঁর নেয়া ১৮ পদক্ষেপগুলো হলো- ১. মন্ত্রণালয়ে নির্ধারিত সময়ে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে কার্যক্রম শুরু ও তদারক করা। ২. মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভা ও দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্থবিরতা কাটিয়ে গতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করা; ৩. গতানুগতিক কাজের বাইরে এসে বিভিন্ন বিভাগের কাজকে মনিটর করা, অকারণে বা ক্ষুদ্র বিপত্তি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা কাজকে গতিশীল করে সম্পন্ন করা।
৪. মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাকে সনাতনী পদ্ধতির বাইরে এনে দীর্ঘস‚ত্রিতার অবসান ঘটিয়ে ইমেজ ফিরিয়ে এনে সেবা সহজীকরণের মধ্য দিয়ে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। নির্মাণ কাজের জন্য একটি নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে ১৬টি সংস্থার স্মরণাপন্ন হতে হতো। ১২টি অপ্রয়োজনীয় স্তরকে বাদ দিয়ে মাত্র ০৪টি স্তর/শর্ত রাখার মধ্য দিয়ে এবং দীর্ঘ দিন পর্যন্ত চলমান রাখার নীতি পরিবর্তন করে স্বল্প ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজউকের নকশা অনুমোদন, বিক্রয় অনুমতি, নাম পত্তনসহ অন্যান্য কার্যক্রমকে প‚নর্বিন্যাস করেন।
৫. জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থায় একইরূপে সেবা সহজীকরণ ও দীর্ঘস‚ত্রিতা দ‚র; ৬. ১ মে ২০১৯ থেকে রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম অটোমেশন পদ্ধতির অধীনে আনয়নের মধ্য দিয়ে নাগরিক সেবাকে ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত ও বর্তমান অবস্থায় পরীক্ষাম‚লকভাবে শুরু করা।
৭. উত্তরা তৃতীয় পর্ব ফ্ল্যাট প্রকল্প, প‚র্বাচল আবাসিক এলাকাসহ অন্যান্য প্রকল্প সরেজমিনে একাধিকবার পরিদর্শন করে প্রকল্পের গতি ত্বরান্বিত করা, কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং ত্রুটিপ‚র্ণ কাজ বন্ধ করে গুণগত মানের কার্যক্রম সরেজমিনে মনিটর করা; ৮. সরকারি অর্থ সাশ্রয় ও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ/প্রকল্প সম্পন্ন করা। অনিবার্য কারণে কোনো প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করা হলে কোনভাবেই আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি না করা। এর ফলে দীর্ঘ দিনের খারাপ দৃষ্টান্তের অবসান ঘটানো হয়; ৯. সরকারি স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষিত না হওয়ায় একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব বাতিল করে নতুন করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে উপযুক্ত আগ্রহী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে আহŸান করা।
১০. রাজউককে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সদস্য পর্যায়ে দায়িত্ব বন্টণ, রাজউকের নথি হারিয়ে যাবার দীর্ঘদিনের খারাপ দৃষ্টান্ত অবসানের জন্য সকল নথি/রেকর্ড খুঁজে বের করা, কোন নথি না পাওয়া গেলে একই নথির বিকল্প নথি তৈরী করা এবং স্ক্যানিং পদ্ধতির মাধ্যমে ডাটাবেজ করে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা চালু করা; ১১. ঢাকা মহানগরীর অপরিকল্পিত ইমারতের ঝুঁকি থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার জন্য পর্যায়ক্রমে সকল ইমারত পরিদর্শন করে রিপোর্ট অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ; ১২. এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাÐের ঘটনায় শুধু মালিক ও ডেভেলপার নয়, অন্য কারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত, তাদেরকেও খুঁজে বের করার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন ও কার্যক্রম শুরু করা; ১৩. অবহেলাজনিত কোনো কারণে কোনো নাগরিকের মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট অবহেলাকারীকেও ফৌজদারী আইনের আওতায় আনা; ১৪. বেশ কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী ব্যক্তির বেআইনীভাবে নির্মিত স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে আইনের বাস্তব প্রয়োগ করা; ১৫. মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় পৃথক পৃথক সমন্বয় সভা করে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দিক-নির্দেশনা প্রদান করে অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা, স্বচ্ছতা ও দ্রæততার সঙ্গে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া; ১৬. দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কতিপয় ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ করার মধ্য দিয়ে বাস্তবতার প্রতিফলন দেখানো; ১৭. মন্ত্রণালয়ে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর সংস্থার কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা, সততা ও দ্রæততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; ১৮. অনুমোদনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মিত সকল ইমারতের পরিদর্শন রিপোর্ট এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ।