২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ চাল আমদানি করেছে বাংলাদেশ
নূর মাজিদ : গত ৩২ বছরের মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই সর্বাধিক পরিমাণ চাল আমদানি করে বাংলাদেশ। মার্কিন কৃষি বিভাগ- ইউএসডিএ চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরে। দপ্তরটির ‘গ্রেইন অ্যান্ড ফিড অ্যানুয়াল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে আসে এই চিত্র। যেখানে বলা হয়েছে গত অর্থবছর মোট ৩৬ লাখ টন চাল আমদানি করেছে বাংলাদেশ। ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরের পর যা সর্বোচ্চ পরিমাণ চাল আমদানির রেকর্ড। দ্য এজ, নিউজবিডি
এর আগে সর্বোচ্চ পরিমাণ চাল আমদানি করা হয়েছিলো ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে। সেবছর মোট ৩০ লাখ ৬০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয় দেশে। বাংলাদেশের জাতীয় বাণিজ্য পরিসংখ্যানের বরাতে ইউএসডিএর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। মার্কিন দপ্তরটির নিজস্ব হিসেব অনুসারে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এপ্রিল নাগাদ দেশে চাল উৎপাদন পূর্ববর্তী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ কমে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর নাগাদ উৎপাদিত হয়েছিলো ৩ কোটি ৪৫ লাখ টন চাল। যার বিপরীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎপাদন ছিলো মাত্র ৩ কোটি ২৬ লাখ টন। এর আগে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ওই বছরে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪২ লাখ টন চাল উৎপাদিত হবে, এমন ধারণা করেছিলো মার্কিন কৃষি বিভাগ। তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তারা এই ভুল সংশোধন করে।
ইউএসডিএ প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপেই গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চালের উৎপাদন কমে। যার কারণে আমদানির পাশাপাশি বাড়ে স্থানীয় বাজারে চালের দর। এই সময় স্থানীয় বাজারে চালের দর ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ে পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায়। তবে এই প্রতিবেদনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো ২০১৮-১৯ সালের চাল উৎপাদন পূর্বাভাস। চলতি অর্থবছরে চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৪৭ লাখ টন হবে, অনুমান মার্কিন কৃষি বিভাগের। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, মে ২০১৮ থেকে এপ্রিল ২০১৯ নাগাদ বোরো, আউশ এবং আমন, এই প্রধান তিনটি ধানের মৌসুমে আশাতীত উৎপাদন অর্জিত হবে। এছাড়াও আগামী অর্থবছরে বাড়বে ধানের আবাদি জমির পরিমাণ। চলতি অর্থবছরে ১ কোটি ২০ লাখ হেক্টরে ধানের আবাদ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে যার পরিমাণ হবে ১ কোটি ৭০ লাখ হেক্টর।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, অনুকূল আবহাওয়া এবং ধানের আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে কৃষকদের আগ্রহ এইক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। যা বাড়তি উৎপাদনেও সহায়ক অবদান রাখবে। গত অর্থবছরে কম উৎপাদনের কারণে চলতি বছর ন্যায্যমূল্য পাওয়ার আশা কাজ করছে ধান চাষিদের মাঝে। এরআগে, গতবছর সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয়ে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দেয়ার অঙ্গীকার করে সরকার। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব