নটর ডেমের ডিজিটাল কাঠামো পাওয়ায়গির্জা পুনঃর্নির্মাণে লাগবে ৫ বছর
রাশিদ রিয়াজ : সাড়ে ৮’শ বছরের বেশি পুরোনো নটর ডেম ক্যাথিড্রালের ডিজিটাল কাঠামো লেজার রশ্মির সাহায্যে ভ্যাসার কলেজের শিল্পকলার শিক্ষক অ্যান্ড্রু ট্যালন ২০১৫ সালেই করে রেখেছিলেন। কে জানত অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গির্জাটি। আর গথিক স্থাপত্য নিয়ে গবেষণা করতেই ট্যালন গির্জাটির হুবহু ডিজিটাল প্রতিলিপি বানিয়েছিলেন। এখন ধ্বংসস্তুূপ সরিয়ে তাকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনার যে স্বপ্ন দেখছে গোটা বিশ্ব সে উদ্যোগে মার্কিন ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু ট্যালনের ডিজিটাল কাঠামোটি কাজে লাগবে।
৩০০ ফুট উঁচু মিনার, ১২ টনের ইমানুয়েল (বড় ঘণ্টা), সিসার নকশা, ১৩০০ গাছ থেকে তৈরি ছাদ-কড়ি-বরগা— মধ্যযুগের শিল্পীরা কী ভাবে ওই প্রকা- ক্যাথিড্রাল তৈরি করেছিলেন, সে নিয়ে দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন ট্যালন। ক্যাথিড্রালের ৫০টি পৃথক স্থানে ট্রাইপড বসিয়ে লেজার রশ্মি চালিয়ে মানচিত্র বানিয়েছিলেন।
ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত ট্যালন গত বছর নভেম্বরে মারা যান। কিন্তু তার তৈরি করে যাওয়া ডিজিটাল মডেলই এখন ক্যাথিড্রাল পুননির্মাণের অন্যতম পথ। কারণ ক্যাথিড্রালে সূক্ষ্ম-সূক্ষ্ম কারুকাজ ধরা আছে ট্যালনের মানচিত্রে। স্থাপত্যকীর্তি নির্মাণ বিষয়ক একটি সংস্থা ‘স্টিরিয়ো’-র অন্যতম কর্তা ড্যান এডলেসন বলেন,‘পুননির্মাণ সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন থাকলে, কিংবা কী ভাবে ক্যাথিড্রালটি বানানো হয়েছিল তা জানতে চাইলে, ওই প্রতিলিপি দেখা উচিত। প্রতিটি ছোট ছোট নকশা, তার মাপ, বিশদে রয়েছে প্রতিলিপিটিতে।’ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাতশো বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে ক্যাথিড্রালের নকশায় রূপান্তর করা হয়েছে। যার ফলে ওর স্থাপত্য ইতিহাস বেশ জটিল। কেন ওই সব রূপান্তর করা হয়েছিল, থ্রি-ডি লেজার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ট্যালন তা ‘তদন্ত’ করে দেখেছিলেন। তার গবেষণাপত্রে এ ছাড়াও বহু অজানা তথ্য রয়েছে।
মারা যাওয়ার আগে একটি সাক্ষাৎকারে ট্যালন জানিয়েছিলেন, নটর ডেম ক্যাথিড্রালের সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ২০১৭ সালে একটি ভিডিয়োয় তিনি বলেছিলেন, ‘ক্রমাগত জল পড়ে পাথরে ক্ষয় ধরেছে, কালের নিয়মে ক্যাথিড্রালের গায়ের মূর্তিগুলো নষ্ট হয়েছে, কাঠের তৈরি ছাদের কিছু অংশ উধাও।’ প্রিয় নটর ডেমের সংস্কারের জন্য অর্থ জোগাড় করতে একটি তহবিল তৈরি করেছিলেন ট্যালন, ‘ফ্রেন্ডস অব নটর ডেম দ্য প্যারিস ইন আমেরিকা’। বলতেন, ‘একটানা জল লেগে, দূষণ সহ্য করে ওরা ভাল নেই। ওদের একটু যতœ প্রয়োজন… একটু নজর দিন।’ দি লোকাল