৩০ দিনের অভিযানে উচ্ছেদ ৩৩০০, ১১২ একর জমি উদ্ধার, ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পণ্য নিলাম
তরিকুল সুমন : বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, বালু, ধলেশ^রী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কাজ করছে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ঢাকা নদী বন্দর সূত্র জানায়, তারা চার মাসে ৩০ টি অভিযান পরিচালনা করেছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর ৪ দিন অভিযান পরিচালনা করেছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে চলমান অভিযানে উচ্ছেদ ৩ হাজার ৩শ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১১২ একর জমি এবং ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পণ্য নিলাম করা হয়েছে। এ দুটি নদী বন্দনের আওতায়র বিভিন্ন নদীতে আরো প্রায় ৯শ স্থাপনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, নদীর তীর থেকে অবৈধ উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেকোনো ভাবেই নদীর তীর মুক্ত করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। বুধবার আমরা আমাদের নদ নদী রক্ষা সংক্রান্ত মহা পরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই নদীর তীর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সারা দেশে ক্র্যাস প্রোগ্রাম চালু করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে করে পুন দখল না হয় এজন্য ওয়াকওয়ে, বনায়ন, ইকোপার্ক, ল্যান্ডিংস্টেশন, আধুনিক টারমিনাল ও গ্যাংওয়ে, সদরঘাট টারমিনাল সম্প্রসারণ, সীমানা পিলার স্থাপন, কেবলকার, ফেরি সার্ভিস, নদীর তলদেশ বর্জ্য উত্তোলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নদীর পানি দূষণ মুক্ত করে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ তৈরির জন্য আমরা কাজ করছি। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গাসহ অন্যন্য নদীর দূষণ বন্ধ করা হবে। এ জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প ও নেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর মাহবুব-উল ইসলাম জানান, উচ্ছেদকৃত অংশে আরো ৩টি ইকো পার্ক (সিন্নিরটেক, টঙ্গী ও আশুলিয়া) করা হবে, আরো ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা), ১০৫ কি.মি রেলিং নির্মাণ, ৪৫ কিমি. তীর রক্ষা, ১০০ টি সিড়ি, ১৯ টি জেটি (১০ টি হেভি, ৯ টি হালকা), ৩৮ টি স্পাড, ১০ হাজার ৮২০ টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়াও আমরা নদীর তলদেশ থেকে বর্র্জ্য উত্তোলনের জন্য বিশেষ ড্রেজার সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা বুড়িগঙ্গা নদীর পানি শোধন করার জন্যও উদ্যোগ নিচ্ছি।
বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম-পরিচালক এবং ঢাকা নদী বন্দরের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, ২৯ জানুয়ারি থেকে ১৮ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত ৩০ দিন ইচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করো হয়েছে। এ অভিযানে ৩ হাজার ১২৭ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে প্রায় ১শ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে নিয়ে চার নদীর প্রায় ৪৫ কিলোমিটার নদীর তীর দখলে এসেছে। এ নদী বন্দরের আওতায় আরো প্রায় ৭৫০ টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। রোজার আগের দিন পর্যন্ত চলবে উচ্ছেদ অভিযান।
বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম-পরিচালক এবং নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা গুলজার আলী জানান, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের আওতাধীন বিভিন্ন জায়গার নদীর তীরে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে এ পর্যন্ত ১২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ৮ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার পণ্য নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এসময়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ লাখ টাকা। নদী দখলদারের তালিকায় ডকইয়ার্ডসহ ২৫৯ স্থাপনা রয়েছে। সম্পাদনা : ইকবাল খান