বর্তমান জনসংখ্যার প্রেক্ষাপটে খাদ্যঘাটতি দেখা দিলে বৈদেশিকলেনদেনের উপর চাপ পড়বে বলে মনে করেন আবু আহমেদ
আমিরুল ইসলাম : গত ৩২ বছরের মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই সর্বাধিক পরিমাণ চাল আমদানি করে বাংলাদেশ। মার্কিন কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে। দফতরটির ‘গ্রেইন অ্যান্ড ফিড অ্যানুয়াল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে আসে এই চিত্র। বর্তমানে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকা সত্ত্বেও এতো বেশি চাল আমদানির বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেছেন, কারণ এখনকার সময়ে আমাদের যে পরিমাণ জনসংখ্যা তাতে যদি খুব বেশি খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে আমাদের বৈদেশিক বিনিময়ের উপর খুব চাপ পড়বে।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ভালো। মার্কিন সংস্থা যে সময়ের কথা বলছে সে সময়ে বাংলাদেশে চালের ঘাটতি ছিলো। আসলে কয়েকটা রাষ্ট্র চাল রপ্তানি করে, বাংলাদেশ তো একটা ঘাটতির দেশ, তাই আমাদের চাল আমদানি করতে হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। আমাদের এ বছর চালের কোনো ঘাটতি নেই। কিছু রাষ্ট্র রয়েছে যখন আমাদের ঘাটতি দেখা দেয় তখন তারা চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্ডিয়া। যে বছর বেশি ঘাটতি থাকে সে বছর বেশি আমদানি করতে হয়। আর বাংলাদেশসহ আরও দু’একটা রাষ্ট্র যখন চাল আমদানি করে তখন দামও বেড়ে যায়। যারা চাল বিক্রেতা, যারা চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারা খুব খেয়াল রাখে কোন কোন দেশে চালের ঘাটতি রয়েছে, সে অনুযায়ী তারা দামও বাড়াতে থাকে। আমাদের নিজেদেরই আমাদের খাদ্যের জোগান দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কখনো কখনো ঘাটতি দেখা দিলে সেটা যাতে ব্যবস্থা করার ক্ষমতা থাকে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। এখন কিন্তু চালের দাম কম আছে বিদেশের বাজারে। যারা জোগানদাতা তারা অনেক সময় আমাদের জিম্মি করে ফেলে। আবার দেশের ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দেয়। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের উপর একটা চাপ পড়ে। আমাদের দেশের খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে। সরকারের নিজস্ব গুদামে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলে তখন সিন্ডিকেটগুলো অতিরিক্ত ব্যবসা করার সুযোগ পায় না। বাংলাদেশে এ বছর যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ করা আছে।