সান্দ্রা নন্দিনী : শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সেনারতœ বলেছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশদ সতর্কতামূলক প্রতিবেদন পুলিশ প্রধানকে পাঠানোর পর, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গত ৪ এপ্রিল থেকেই তাওহীদ জামাতের বিষয়ে সতর্ক করে আসলেও হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এমনকী ১১ এপ্রিল একাধিক নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানদের কাছে বিবৃতিও পাঠানো হয়। দুইটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকেও হামলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিলো। সূত্র : বিবিসি, স্পুটনিক, সিএনএন
মার্কিন গণমাধ্যমে শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে হামলার পূর্বভাস জানিয়ে এপ্রিলের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিলো। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাইথ্রিপালা সিরিসেনার একজন উপদেষ্টা শিরল লাকথিলাকা সোমবার বিবিসি’কে বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিলো যে সতর্কবার্তা তাৎক্ষণিকভাবেই নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। হামলার পরপরই ঘটনা তদন্তে প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নগর পরিকল্পনামন্ত্রী রফ হাকিম বলেন, ‘পুরো বিষয়টি আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চূড়ান্ত ব্যর্থতার স্বাক্ষর রেখেছে। আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি অধ্যায়। আমরা সকলেই লজ্জিত।’
আর টেলি-যোগাযোগমন্ত্রী হারিন ফের্নান্দো এক টুইট-বার্তায় বলেন, ‘কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা হামলার বিষয়ে আগেই সতর্ক করলেও তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া বদলে বিষয়টিকে সম্পূর্ণই অবহেলা করা হয়েছে।’
তবে দেশটির অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও জনবরাদ্দমন্ত্রী হর্ষ ডি সিলভা দাবি করছেন, তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলে হামলার ঘটনাটি গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার জন্য ঘটেনি। হর্ষ ডি সিলভার মতে, রক্তক্ষয়ী এই হামলা অবশ্যই প্রতিহত করা সম্ভব ছিলো যদি সতর্কতাসমূহ সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় সরবরাহ করা হতো।
সোমবার এক সাক্ষাৎকারে ডি সিলভা বলেন, ‘এখানে চরম বিপর্যয় ঘটেছে যোগাযোগ ও সমন্বয়হীনতার। কেননা, সঠিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে তথ্য সরবরাহ করা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হতো। অন্তত কিছুটা পরিমাণে হলেও ঠেকানো যেতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কাছে ইনটেল রয়েছে। যার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সেরকম ব্যাপক হামলা হতে পারে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এরকম একটি ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলো এবং ১১ এপ্রিল পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল একাধিক জায়গায় আগাম সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন। তাই আমি কখনই মনে করি না এটি কোনও গোয়েন্দা ব্যর্থতা। এটি সম্পূর্ণই বাস্তবায়নের ব্যর্থতা। এখন এটিই প্রশ্ন যে কেন গোয়েন্দা সতর্কতার বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করা হলো না।’