আসিফুজ্জামান পৃথিল : ইসলামিক স্টেটস-আইএস দাবি করেছে, তাদের যোদ্ধারাই ২১ এপ্রিল রোববার শ্রীলঙ্কায় গীর্জা-হোটেলে সিরিজ আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার দলটির মুখপত্র বার্তা সংস্থা আল-আমাক এই দাবি করে বিবৃতি দেয়। ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে শ্বেতাঙ্গ জঙ্গির হামলায় ৫০ জন মুসলিম নিহত হওয়ার পরই গোষ্ঠীটি বড় ধরণের প্রতিশোধ হামলার ঘোষণা দিয়েছিলো। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩২৩ জন। আহতের সংখ্যা ৫ শতাধিক। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি। এদিন প্রথমবারের মতো নিহত বেশ ক’জনের অন্তেষ্ট্যিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল পর্যন্ত ওই নৃশংস হামরায় জড়িত সন্দেহে ৪০ জনকে আটক করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। নিউইয়র্কটাইমস, এনডিটিভি, ইয়ন, সিএনএন।
বিশেষ বুলেটিনে আইএসের আমাক জানায়, এই হামলা ‘আইএস যোদ্ধারা’ চালিয়েছে। তাদের বিবৃতিটিতে প্রকাশ করা হয়েছে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে। টেলিগ্রাম এনক্রিপ্টেড হওয়ায় এই অ্যাপে দেওয়া মেসেজের উৎস জানা সম্ভব হয়না। এই অ্যাপে আইএস এর একটি নিজস্ব চ্যাটরুম আছে। এতে আরো বলা হয়েছে, এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলো খ্রিস্টানরা। তবে তাদের বার্তায় এটি পরিস্কার নয়, হামলাকারিরা সরাসরি আইএসএর সদস্য নাকি মদদপুষ্ট। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই জঙ্গি সংগঠন আইএস চার্চে হামলা চালানোর আহŸান জানিয়ে আসছিলো। এর আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছিল, শ্রীলংকায় হামলার ধরনের সঙ্গে আইএসের হামলার ধরনের মিল রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালেই পার্লামেন্টে দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেবর্ধনে দাবি করেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে গুলি চালানোর ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই শ্রীলংকায় ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় একের পর এক বোমা হামলা চালানো হয়। শ্রীলঙ্কান দুটি ইসলামিক গ্রæপ এই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে শ্রীলঙ্কা। এদিন নিহতদের একটি অংশের গণ অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশটি। দেশটিতে গতকাল জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। কলম্বোর উত্তরে নেগোম্বোর সেইন্ট সেবেস্টিয়ান চার্চে ৩০ নিহত ব্যক্তির গণ অন্তেষ্ট্যিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। শোক দিবস পালনে দেশটি স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় ১ মিনিট নিরবতা পালন করে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। দেশটিতে আরোপিত জরুরি অবস্থা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীকে যে কাউকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের অধিকার দিয়েছে। এ ধরণের ক্ষমতা সর্বশেষ ব্যবহার হয়েছে গৃহযুদ্ধের সময়। সম্পাদনা : ইকবাল খান