আমাদের বিশ্ব • আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েলসরবরাহ করবে রাশিয়ার ‘টিভেল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি’
সোহেল রহমান : নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখতে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাইফ-টাইম নিউক্লিয়ার ফুয়েল সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ‘টিভেল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি’। এ কোম্পানির মনোনীত ঠিকাদার ‘জেএসসি এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট’ ফুয়েল সরবরাহ করবে। এ প্রেক্ষিতে ‘টিভেল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি’র সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সরাসরি ক্রয় চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, এটি ছাড়াও ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে আরও দুটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে প্যাকেজ ১১ এর আওতায় ৫০ হাজার টন গম আমদানিসহ দুটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ পুরো গতিতে চলমান রয়েছে। এ প্রকল্প পরিচালনার জন্য যে নিউক্লিয়ার ফুয়েল প্রয়োজন, সুনির্দিষ্ট উৎস ছাড়া আন্তর্জাতিক খোলা বাজারে তা পাওয়া অসম্ভব। এ কারণে বাংলাদেশ সরকার ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তির আওতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় রাশিয়ান ফেডারেশন কর্তৃক লাইফ-টাইম নিউক্লিয়ার ফুয়েল সরবরাহের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, দ্বিপাক্ষিক একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে গত ৩১ জানুয়ারি নিউক্লিয়ার ফুয়েল ক্রয়ের চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। চুক্তিতে নিউক্লিয়ার ফুয়েলের দাম নির্ধারণ পদ্ধতি ঠিক করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহের সময় বিশ্ববাজারে বিদ্যমান দর অনুযায়ী এবং প্রতি দশ বছর পর পর দর পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া নিউক্লিয়ার ফুয়েল ক্রয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘অর্গানাইজেশন অব ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ কর্তৃক প্রকাশিত ‘দি ইকোনোমিক অব নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাইকেল’ ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনোমিক অ্যান্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, ১৯৯৪-এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছেÑখনি হতে আহরিত ইউরেনিয়াম আন্তর্জাতিক বাজারে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে থাকে। ফুয়েল কেনার আদেশ দেয়ার আগে ইউরেনিয়ামের মূল্যে উপর ভিত্তি করে ৫০ শতাংশ এবং ডলার ও ইউরোর বাৎসরিক অবমূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে ৫০ শতাংশ ধরে পূর্বমূল্য নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে ডলার ও ইউরোর বাৎসরিক মূল্যস্ফীতির হারও বিবেচনায় নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার এজেন্সি কর্তৃক আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত প্রতি কিলোগ্রাম ইউরেনিয়ামের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫০ ডলার। এমতাবস্থায় চুক্তির আওতায় পরবর্তী সাড়ে ৪ বছর ইউরেনিয়মের দাম বাড়বে না। এরপরে বছরে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ হারে দাম বাড়তে পারে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে আরও দুটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑবাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় ২ডি নন-এক্সক্লুসিভ মালটি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে পরিচালনার লক্ষ্যে পুনঃদরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিডে সর্বোচ্চ মূল্যায়িত বিডার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের নীতিগত অনুমোদন এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরভুক্ত ‘ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণে চীনা জিটুজি ভিত্তিতে অর্থায়নে বাস্তবায়নের পরিবর্তে সীমিত দরপত্র আহŸানের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য নীতিগত অনুমোদন। [জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশ
তিনি জানান, অন্যদিকে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে প্যাকেজ-১১ এর আওতায় ৫০ হাজার টন গম আমদানিসহ দুটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি টন গমের দর ২৬৭ দশমিক ৯৮ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ১১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড’ এটি সরবরাহ করবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান