আমাদের বিশ্ব • আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ২
প্রযুক্তির উন্নতি এবং সহজলভ্যতা সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, র্যান্ড কর্প প্রতিবেদন
নূর মাজিদ : যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত গবেষণা সংস্থা র্যান্ড কর্পোরেশন তাদের অনলাইন বøগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা জানায়। সংস্থাটির সহকারি রাজনৈতিক গবেষক কলিন পি. ক্লার্ক ‘টয় ড্রোনস অ্যান্ড টুইটার : দ্য অ্যাবিলিটি অব ইন্ডিভিজ্যুয়ালস টু রেক লার্জ-স্কেল হ্যাভক ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন লেখেন। আলোচিত প্রতিবেদনে তিনি প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মাত্র একজন ব্যক্তি বা ছোট্ট একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পক্ষে কিভাবে ব্যাপক ধবংসাত্মক হামলা চালাতে পারে তা ব্যাখ্যা করেন। সূত্র : র্যান্ড অর্গ
এই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সৌদি আরবের একটি ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। দেশটির বাদশাহ সালমানের রাজপ্রাসাদের ক¤পাউন্ডে গত বছরের এপ্রিলে একটি খেলনা ড্রোন অনুপ্রবেশ করে আকাশপথে। প্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি করে ড্রোনটি ভূপাতিত করেন। এইসময়, সৌদি রাজতন্ত্র উৎপাত হচ্ছে এবং রাজপ্রাসাদ অবরুদ্ধ এমন নানা গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান অতি স¤প্রতি নিজ দেশে যেসব দমনাভিযান চালিয়েছেন তার কারণে সৌদি আরবের অনেক নাগরিক সেসময় তার উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। রাজপ্রাসাদে গোলযোগের সুবাদে এই সময় একটি জনবিক্ষোভ সংগঠিত হতেও পারত। যারা ড্রোন অনুপ্রবেশের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের একটি অংশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে অভ্যুত্থানের গুজব রটায়। এই ঘটনা সুনির্দিষ্টভাবেই সহজলভ্য বাণিজ্যিক ড্রোন এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নির্দেশ করে, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির নেপথ্যে অবদান রাখতে পারে।
ক্লার্কের দাবি, বিশ্বব্যাপী এই ধরনের প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এখন নাশকতাকারীদের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করছে। ইতিহাসের দিকে তাকালেও এমন অসংখ্য নজির দেখা যায়। যেসকল ঘটনায় ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক পালাবদলের অভিসন্ধি দীর্ঘমেয়াদী অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছিলো। প্রথম মহাযুদ্ধের পেছনেও এমনি একটি ঘটনা দায়ী। ওই সময় সার্বিয়ার একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দল বø্যাকহ্যান্ড অস্ট্রিয়া-হাংগেরির যুবরাজ ফ্রাঞ্জ ফার্ডিনান্ডকে হত্যার মাধ্যমে যে রাজনৈতিক সংকটের সূচনা করে, তা ইউরোপের পর¯পরবিরোধী সাম্রাজ্যবাদি শক্তিগুলোকে একে-অপরের বিরুদ্ধে দীর্ঘ চার বছরের এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করে।
আধুনিক নৈরাজ্যবাদিরাও একই পথে হাঁটছে। তবে এইক্ষেত্রে তারা সাইবার হামলার পথ বেশি বেঁছে নিচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও সরকারি অবকাঠামোর বিরুদ্ধে এই ধরনের কোন হামলা অতি মাত্রায় সফল হলে তার পরিনতি ভয়ংকর হতে পারে, বলেও সতর্ক করেন ক্লার্ক। তিনি আরো বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের মতো মার্কিন নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব ব্যবস্থাবিরোধী দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে সাইবার সন্ত্রাসীরা। যা নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে। ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে তাই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জোর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।’ স¤পাদনা : ইকবাল খান