বিশ্বের শীর্ষ ৩ দরিদ্র দেশের অবস্থান আফ্রিকা মহাদেশে
নূর মাজিদ : সকল মানুষের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য বিশ্বে যথেষ্ট স¤পদ রয়েছে। তবুও, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, বুরুন্ডি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর কয়েক কোটি মানুষ চরম দারিদ্রের মাঝে বসবাস করেন। এই দেশগুলো ২০১৯ সালে বিশ্বের শীর্ষ তিন দরিদ্র দেশ। এই অঞ্চলের মানুষের এমন দুর্ভাগ্যের পেছনে হাত রয়েছে অতি সা¤প্রতিক সময়ের গৃহযুদ্ধ, চলমান জাতিগত সংঘাত ও ধর্মীয় দাঙ্গার। যা আবার উপনেবেশিক শাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক স্বার্থ দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে। সূত্র : গেøাবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন।
প্রাকৃতিক স¤পদে ভরপুর হলেও, তা উত্তোলন এবং ব্যবহারের নিজস্ব সক্ষমতা অনুপস্থিত এসব দেশে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অনুপস্থিতি, ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এসবই দেশগুলোর মূল অর্থনীতিক চিত্রে পরিণত হয়েছে বিগত দুই দশক ধরে। যার কারণে তাদের নাগরিকদের দারিদ্রের পরিমাণ অবর্ণনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও চরম নেতিবাচক। একনায়কতান্ত্রিক শাসন, চরম পর্যায়ের দমন-পীড়ন, জাতিগত নিধনযজ্ঞে সরকারি প্রণোদনা, বিদেশী কো¤পানিগুলোকে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করেই খনিজ স¤পদ উত্তোলনের নামে লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেয়া ইত্যাদি রাজনৈতিক ব্যবস্থার ‘সিগনেচার স্টাইলে’ রূপ নিয়েছে। দারিদ্র নিরূপণ গনিতবীদ এলি খামারোভ জানান, ‘এই দেশগুলোর জনগোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে বিনা অপরাধেই শাস্তি পাচ্ছে। এখানে প্রকৃত স্বাধীনতা অনুপস্থিত। বিদেশী শক্তির ইন্ধনে স¤পদ লুণ্ঠনের জোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে, একনায়কতান্ত্রিক শাসন এবং দুর্নীতি পরায়ণ তাবেদারি সরকার ব্যবস্থা বিশ্বের যে কোন সমৃদ্ধ দেশকে নিঃস্ব এবং অর্থনৈতিক দুর্দশায় নিমজ্জিত করতে পারে। উপনেবেশিক শোষণের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি, সামাজিক সংঘাত, বিরূপাভাবাপন্ন জলবায়ু এবং আগ্রাসী প্রতিবেশী দেশ ইত্যাদি বিষয় পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলেছে।’
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ মেয়াদি দারিদ্র পরিস্থিতি কোন একটি কারণেই তৈরি হয় এমনটি নয়। বরং একাধিক উপাদান এখানে মুখ্য প্রভাব ফেলে। যেমন কোন দেশ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন না করতে পারলে দেশটির জনশক্তিও প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনা। ফলে সেখানে নতুন ব্যবসায় এবং শিল্প স্থাপনে স্থানীয় উদ্যোগ এবং দক্ষ জনশক্তির অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আবার বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন না। অর্থনীতিবিদেরা এই ধরনের পরিস্থিতিকে দারিদ্র চক্র বলে অবহিত করেন। আর দারিদ্র চক্রের কড়ালগ্রাসে পড়েছে আফ্রিকার এসব দেশ। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ দশ দারিদ্রপীড়িত দেশের অবস্থান আফ্রিকাতেই। এদের মধ্যে অন্য তিনটি দেশ আবার সাহেল বা সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। অন্য পাঁচটি দরিদ্র দেশ স্থল সীমান্ত দিয়ে ঘেরা। অর্থাৎ নৌ বাণিজ্য এবং সামুদ্রিক স¤পদ আহরণে এসব দেশের কোন সক্ষমতা নেই। সম্পাদনা : ইকবাল খান