বিশ্বজুড়ে নারী কর্মচারীরা পুরুষের তুলনায় মালিকদের প্রতি অধিক অনাস্থা পোষণ করেন
নূর মাজিদ : চাকরির বাজারে বেতনের ক্ষেত্রে নারীরা বৈষম্যের শিকার হন, একথা আমরা অনেকেই শুনেছি। তবে লিঙ্গভেদে কর্মদাতাদের প্রতি নারী কর্মীদের যে আস্থাহীনতা রয়েছে সেটা স¤পর্কে খুব মানুষই শুনেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এক বৈশ্বিক জরিপের ফলাফলে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করা হয়। মার্কিন গণসংযোগ ও বাজার পরামর্শক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এডেলম্যান এই গবেষণা জরিপ প্রকাশ করে। সূত্র : কোয়ার্টজ ডটকম
বিশ্বের ২৭টি দেশের ৩৩ হাজার নারী কর্মীরা এই জরিপে অংশ নেন। যার ভিত্তিতে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, সরকারি, বেসরকারি চাকরি, ব্যবসা, গণমাধ্যম বা এনজিও সকলখাতের নারীদের মাঝেই এই অনাস্থা কাজ করে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় অনেক বেশি। নিয়োগদাতা ও মালিকদের প্রতি এমন অনাস্থা প্রকাশে শীর্ষে ছিলেন জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আরব আমিরাতের নারী কর্মীরা।
তবে নারীদের মাঝে অনাস্থার পরিমাণ বেশি থাকার কারণও রয়েছে। কারণ উন্নত এবং অনুন্নত সকল দেশেই নারীরা নানাবিধ সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হন। উন্নত দেশে নারীরা মজুরি বৈষম্য, অসম অর্থনৈতিক নীতি, গণমাধ্যমের নেতিবাচক ও ভোগবাদি প্রচারণাসহ নানা প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক অনাচারের সম্মুখীন হন। অন্যদিকে, গৃহস্থালি এবং অন্যান্য নারীদের ব্যবহার্য পণ্য কিনতে পুরুষদের তুলনায় অধিক অর্থ ব্যয় করতে হয় তাদের। ফলে, তাদের আর্থিক আকাংখা এবং চাহিদার পরিমাণটাও থাকে অনেক বেশি।
সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ‘ মি ট ু’ নারী নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনও এইক্ষেত্রে কোন কার্যকর পরিবর্তন আনতে পারেনি। এমনকি মাইক্রোসফট এবং গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানেও নারীরা বেশকিছু ক্ষেত্রে বঞ্চিত হন, এমন অভিযোগ রয়েছে।
তবে এতকিছুর পরেও বিশ্বজুড়ে নারীরা পুরুষের তুলনায় মালিকের প্রতি কিছুটা হলেও আস্থা রাখেন। এডেলম্যানের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্বের ৫৬ শতাংশ নারী এই বিষয়ে একমত পোষণ করেন। এইক্ষেত্রে পুরুষ কর্মীদের আস্থার পরিমাণ ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ, সার্বিক তফাৎ খুব একটা বেশি নয়।