কাতারের ডলার রাজনীতি বৃদ্ধি করছে দেশটির প্রভাব-প্রতিপত্তি ও আর্থিক স¤পর্ক
নূর মাজিদ : তেল ও গ্যাস স¤পদের প্রাচুর্য্যপূর্ণ দেশ কাতার। ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে দেশটির ওপর অবরোধ আরোপ করে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ সৌদি আরব, আরব আমিরাত এবং মিশর। তবে এই অবরোধের ক্ষতি কাতিয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে কাতার। তেল-গ্যাস বিক্রি করে অর্জিত পেট্রো-ডলার দিয়ে দেশটি এখন বিশ্বব্যাপী আকর্ষণীয় সব খাতে বিনিয়োগ করছে। দেশটির এমন উদ্যোগ ইতোমধ্যেই তাদের নিজেদের ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক আগ্রহ তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান এবং অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতি এখন কাতারের সার্বভৌম তহবিলের বিনিয়োগ প্রত্যাশী। ফলে দেশটির সঙ্গে তাদের স¤পর্কও জোরদার হচ্ছে। সূত্র : গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন
অর্থনৈতিক কূটনীতির মাধ্যমে প্রতিবেশিদের বৈরি রাজনৈতিক অভিসন্ধিকে পরাজিত করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল-থানি। তার দূরদর্শী বিনিয়োগ প্রচেষ্টায় তা লক্ষ্যনীয়। জ্বালানিখাতে দেশজ উৎপাদনের চাইতে বৈশ্বিক জ্বালানি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে বিনিয়োগ শুরু করেছেন তিনি। সাম্প্রতিককালে রাশিয়ার বৃহৎ তেল কো¤পানি রসনফটের বড় অংকের মালিকানা ক্রয় করেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিখাতের জায়ান্ট এক্সোন মোবিলের সঙ্গেও ১ হাজার কোটি ডলারের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের চুক্তি করেন। এ দুটি চুক্তি বিশ্ব জ্বালানি বাজার তথা ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে কাতারের প্রভাব অসম্ভব পরিমাণ বাড়িয়েছে। উত্তর আমেরিকার বাজারে জ্বালানি গ্যাস সরবরাহে এক্সোনের সঙ্গে চুক্তি থাকায় বিপুল সুবিধা পাবে কাতার। একইসঙ্গে, ইউরোপে রাশিয়ার তেল রপ্তানিতেও মধ্যস্ততাকারী হবে কাতার। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে তেল শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ করছে কাতার পেট্রোলিয়াম। পাশাপাশি মরোক্কো, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জালানিখাতেও প্রচুর বিনিয়োগ করছে দেশটি।
এ সকল উদ্যোগের জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের চাহিদার মোট তেল ও গ্যাসের ১৮ শতাংশই কাতার থেকে আমদানি করে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তেল বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত পেট্রোডলার মার্কিন প্রযুক্তিখাতের কো¤পানিগুলোতেই বিনিয়োগ করছেন শেখ হাম্মাদ। ফলে, উভয় দেশের জন্য একটি ‘উইন উইন’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন তিনি। মার্কিন চাপের কারণেই তীব্র আক্রোশ থাকা স্বত্বেও কাতারের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারছেনা সৌদি জোট।
কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল এস্টেট খাতেও বিনিয়োগ করছে। এটি বিশ্বের অন্যতম স¤পদশালী বিনিয়োগ তহবিল। তারা জানিয়েছে, ‘আগামীতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে আরো সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।’