রাজনীতিকের বড় অর্জন মানুষের ভালোবাসা
ফাতেমা আহমেদ : সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বুধবার বিকেলে দেশে ফিরেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট নম্বর (বিজি ০৮৫)-এ করে গতকাল বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করেন তিনি। সূত্র : বাসস, বাংলানিউজ, বাংলা ট্রিবিউন
বিমানবন্দরে পৌঁছার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একজন রাজনীতিকের সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষের ভালোবাসা। আমি আমার কাজ ও ব্যবহারের মাধ্যমে তা অর্জন করতে পেরেছি। মানুষের ভালোবাসায় এবং দোয়ায় আজ ২ মাস ১১ দিন পর আমি দেশে ফিরতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনটাই হলো ¯্রােতের বিপরীতে সাঁতার কাটা। আমরা এটা শিখেছি বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকে। শেখ হাসিনার কাছ থেকে। আমাদের প্রিয় নেত্রী পরম মমতায় আমার দেখভাল করেছেন। একজন মা সন্তানের জন্য যা করেন, শেখ হাসিনা আমার জন্য তাই করেছেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। ঋণের বোঝা আরো বেড়ে গেলো।’
কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা কোরআন শরিফ পড়ে আমার জন্য দোয়া করেছেন। তার কাছেও আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় আমি আমার মধ্যে ছিলাম না। আমি শুনেছি শেখ হাসিনা হাসপাতালে আমাকে নাম ধরে ডেকেছিলেন। আমি নাকি কেবল তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম।’
নতুন উদ্যমে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত বরে তিনি বলেন, ‘আমি না থাকার পরও নেতাকর্মীরা ইউনিটি ধরে রেখে যেভাবে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন তা আমায় অভিভূত করেছে। আমরা এভাবেই শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো।’
দলের সাধারণ সম্পাদককে স্বাগত জানাতে বিমান বন্দরে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, আইন বিষয়ক সম্পদক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শাজাহান খান এমপি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী, সিলেট সিটির সাবেক মেয়র বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলসহ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে ওবায়দুল কাদের ছাড়পত্র পান। এক মাস পর হাসপাতাল ছাড়লেও চিকিৎসকরা ‘চেকআপের জন্য’ আরও কিছুদিন তাকে সিঙ্গাপুরে থাকার পরামর্শ দেন। পরে তিনি সেখানে একটি বাসা ভাড়া করে অবস্থান করেন। তার সঙ্গে স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদেরও সেখানে ছিলেন।
কয়েকদিন চিকিৎসার পর অবস্থার উন্নতি হলে গত ২০ মার্চ কার্ডিও থোরাসিক সার্জন ডা. শিভাথাসান কুমারস্বামীর নেতৃত্বে কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়। ছয় দিন পর তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয় ।
এর আগে ৩ মার্চ ভোরে ঢাকায় নিজ বাসায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
ভারতের স্বনামধন্য হৃদরোগ সার্জন দেবী শেঠির পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান