নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি আম উৎপাদনে, এবার ফলবে ২৪ লাখ টন
মতিনুজ্জামান মিটু : ফনিসহ ঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং দাম না পেয়ে অনেকে চাষ ছেড়ে দেয়ার পরেও এবার আম উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বেন না। নতুন নতুন বাগান প্রতিষ্ঠার কারণে কমবে না আমের উৎপাদন, বরং বেশি হতে পারে। কৃষি কর্মকর্তা, ফলবিদ ও দেশের বিভিন্ন স্থানের ফলচাষিদের সঙ্গে আলাপ করে এমনই ধারণা পাওয়া গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের(প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. মেহেদী মাসুদ, অনেক কথার পরেও দেশে আম চাষ বাড়ছে। হর্টিকালচার উইং এর হিসেবে ৬ বছরে দেশে আমের জমি ও উৎপাদন ক্রমাগত বেড়েছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে এক লাখ ৯২ হাজার ২০২ হেক্টর জমিতে ২৩ লাখ ৭২ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। ২০১২- ১৩ অর্থ বছরে দেশের এক লাখ ৫৬ হাজার ৩২২ হেক্টর জমিতে ১৫ লাখ ৪ হাজার ৪১৫ মেট্রিক টন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এক লাখ ৬১ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমিতে ১৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এক লাখ ৬৮ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে ২০ লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টন ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়।
জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ফল চাষী সেলিম রেজা বললেন, দাম না পেয়ে এবং প্রতিকুল অবস্থায় পড়ে অনেকে আমের গাছ কেটে চাষ ছেড়ে দিয়েছেন। গতবারের চেয়ে এবার আমের ফলন কম, তবে নতুন নতুন বাগান সৃষ্টিতে উৎপাদন ঠিক থাকবে।
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. মো. শরফ উদ্দিন জানালেন, স্বাদ ও জনপ্রিয়তার জন্য আমকে বাংলাদেশে ফলের রাজা বলা হয়। আম গাছের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে ২০১৫ সালে আম গাছকে জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। পুষ্টি উপাদান ও বহুবিধ ব্যবহারের কারণে অন্য কোন ফলের সাথে আমের তুলনা হয় না। পাকা আম উচ্চমানসম্পন্ন ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ এবং খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। আম সাধারণত বাংলাদেশের সব এলাকায় আবাদ হয়, তবে উঁচু মান, স্বাদ ও অধিক উৎকৃষ্ট আম চাষের উপযোগী মাটি ও কৃষি জলবায়ুর জন্য দেশের উত্তর পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে সর্বাধিক আম আবাদ হয়। বর্তমানে কিছু কিছু পাহাড়ী এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উচ্চ ফলনশীল মানসম্পন্ন আমের চাষাবাদ হচ্ছে। আম ওই এলাকার মানুষের আয়ের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে।