রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহে কমেছে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম
রমজান আলী : রমজানের শুরুতে বেড়েছে ছিলো সব ধরনের সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও দাম। ১০ দিনে ব্যবধানে আবার তা কমতে শুরু করেছে। কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে পাঁচ টাকা, সবজির দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা, ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা। বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, চিনি, মাছ, গরু ও খাসির মাংস। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় মুদিপণ্যের দাম।
শুক্রবার রাজধানীর শ্যামবাজার, সূত্রাপুর, দয়াগঞ্জ, রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, সেগুনবাগিচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও ৩২ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো। আর আমদানি করা প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ টাকায়। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ২৮ টাকায়। তবে বেড়েছে রসুনের দাম। গত সপ্তাহে রসুন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা আগের দামে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর বাজারে সবজির দাম কমেছে। এখন বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। সে হিসাবে একদিনের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। দাম কমা সবজির মধ্যে মান ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। যা একদিন আগে ছিলো ৫০ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা যা একদিন আগে ছিলো ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। একদিন আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া ধুন্দুুল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, লেবু হালি মান ভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকা। আর কাঁচা মরিচের ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে সজনে ডাটা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাল শাক, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ী বলরাম সাহা বলেন, শুক্রবার থেকে মোকামে পেঁয়াজের দাম কমেছে। তাই আমরাও ৫ টাকা কমে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। একইসঙ্গে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে সবধরনের সবজির দাম। তবে কিছু দিনের মধ্যে সবজির বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। নতুন সবজি আসলে এমনিতেই দাম কমে যাবে।
এদিকে বাজারগুলোতে নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী দেশি গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫২৫ টাকা এবং বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫০০ টাকা ও মহিষের মাংস প্রতিকেজি ৪৮০ টাকায় বিক্রয়ের জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা এবং ভেড়ার মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা ধরে বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত মাংসের এ দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সকালে অভিযানের ভয়ে নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি হলেও বিকালে ২০ থেকে ৭৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ১৫৫ টাকা। আর লেয়ার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। যা আগে কদিন আগে ছিল ১৯০ টাকা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম। বাজারে প্রতিকেজি নাজির ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮- নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫। প্রতিকেজি খোলা আটা ২৭ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, খোলা ময়দা ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।
টানা দুই সপ্তাহ দাম কমার পর ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়। মুদি দোকানে ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়।
এছাড়া ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। অপরিবতিত রয়ের্ছে বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। প্রতিকেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০, বেলে মাছ প্রকার ভেদে ৭০০ টাকা, বাইন মাছ ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া মাছ ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।