আবু তাহের খান বললেন, বেসরকারি গুদাম ভাড়া নিয়েও সরকার ধান-চাল মজুদ করতে পারে
আমিরুল ইসলাম : অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ধানের ফলন অনেক বেশি হওয়ায় এবং ধানকাটা শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ার কারণে ধানচাষে কৃষকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। ধানের মূল্য কম হওয়ার কারণে কৃষককে ধানক্ষেতে আগুন লাগিয়ে প্রতিবাদ করতেও দেখা গেছে। কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন জানতে চাইলে বিসিকের সাবেক পরিচালক আবু তাহের খান বলেন, বেসরকারি গুদাম ভাড়া নিয়েই সরকার ধান-চাল মজুদ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সরকার তৈরি পোশাক খাতে নগদ ভর্তুকি দিচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বৃদ্ধির জন্য। পোশাক খাতে দেয়া গেলে কৃষককে ভর্তুকি দিতে আপত্তি কোথায়? কৃষককেও ভর্তুকি দেয়া উচিত। পোশাক খাতের মতো কৃষককে হাতে হাতে ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন নেই। পোশাক খাতে যেমন রপ্তানির পরিমাণ দেখে একটি প্রতিষ্ঠানকে নগদ টাকা ভর্তুকি দিয়ে দেয়া হয়। কৃষক এমন কিছুও চায় না। সামান্য পেলেই কৃষকরা অনেক খুশি হয়। সরকার পক্ষ থেকে কৃষকের ধান কিনে জমা করলেই তো ভর্তুকি হয়ে যায়। সরকারের প্রথম কর্তব্য হচ্ছে প্রত্যেক এলাকা থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা। সরকারের ক্রয় কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। সরকার প্রয়োজন হলে ধান চাল রপ্তানি করবে। এখন পর্যন্ত ব্যক্তি উদ্যোগে চাল রপ্তানি করা হচ্ছে। এখন শুধু সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। সব চাল রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা হোক। অন্যান্য খাতে যেমন ভর্তুকি দেয়া হয় তেমন চাল রপ্তানির ক্ষেত্রেও ভর্তুকি দেয়া হোক।
তিনি আরো বলেন, পোশাক, ঔষধ ও চামড়ার মতো এখন চাল রপ্তানির কথাও ভাবতে হবে। সমস্যা যেটা দাঁড়িয়েছে সেটা এক বছরের মধ্যে সমাধান করা যাবে না। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের অন্যতম রপ্তানি পণ্য হবে চাল। এজন্য একটা মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। তাহলে বহু লোক চাল রপ্তানি করার জন্য উদ্যোগী হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, গ্রামে কৃষক সে দাম পাচ্ছেন না। গ্রামের চাল ক্রয়কেন্দ্রগুলোতে কৃষকদের হয়রানি করা হচ্ছে। ক্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা দুটোই বাড়াতে হবে। স্বচ্ছতা বলতে কৃষকের সঙ্গে মূল্য নিয়ে কোনো কারচুপি করা যাবে না। দক্ষতা হলো দ্রুততার সঙ্গে ক্রয় করতে হবে। সরকার পক্ষ থেকে বাজার তদারকি করতে হবে। বহু বেসরকারি গুদাম পড়ে আছে, সরকারের ধান রাখার জায়গা না থাকলে সেগুলোকে ভাড়া নিতে পারে। সরকারি গুদাম নির্মাণেরও প্রয়োজন নেই। গুদাম নির্মাণ করতে গেলে প্রচুর টাকা দুর্নীতি হয়ে যায়।