রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলো ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ
লিহান লিমা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরশেনের (আরসিবিসি) পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে দেশটির বিচার বিভাগ। রিজার্ভ চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সিএনএন ফিলিপাইন, ম্যানিলা বুলেটিন
ফিলিপাইনের জাস্টিস আন্ডার সেক্রেটারি মার্ক পিরেটি গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান, আরসিবিসির সাবেক ট্রেজারার রাহুল ভিক্টর তান, ন্যাশনাল সেলস ডিরেক্টর ইসমায়েল রায়েস, রিজিওনাল সেলস ডিরেক্টর ব্রিজিতে কাপিনা, কাস্টমার সার্ভিস হেড ফর জুপিটার বিজনেস সেন্টার রোমুয়ালদো আগারর্দো এবং সিনিয়র কাস্টমার রিলেশনশীপ অফিসার ফর জুপিটার বিজনেস সেন্টার আগেলা রুথ টোরেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
এর আগে তদন্তকারী দল তাদের আপিলের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট লঙ্ঘনের যথাযথ প্রমাণ পাওয়ার পর এই ঘোষণা আসে। মাকাতি রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট (আরটিসি) এর ১৪১নং ব্রাঞ্চে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ১০ পৃষ্টার রেজ্যুলেশনে বলা হয়, ‘সন্দেহভাজন রেমিট্যান্সকে কেন্দ্র করে তাদের আচরণ এবং অবস্থান অগ্রহণযোগ্য, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব ভূমিকা পালন করেছেন এবং অপরাধকে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। তান, কাবিনা, রেয়েস, আগার্দো ও টোরেসের আচরণ আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতার পরিপন্থী।’ পিরেটি বলেন, ‘প্রসিকিউটরা খবর পেয়েছেন চুরির টাকা নিউইয়র্ক হয়ে ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে স্থানান্তর কার্যক্রমের সঙ্গে এই পাঁচ কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন।’
জানুয়ারিতে মাকাতি আরটিসি ব্রাঞ্চ ১৪৯ আরসিবিসির সাবেক ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মায়া সান্তোস দিগুইতোকে মানি লন্ডারিংয়ে দোষী সাব্যস্ত করে। আদালত জানায়, ‘দিগুইতো হ্যাকারদের দ্বারা পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা আরসিবিসির জুপিটার স্ট্রিট শাখার চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে সাহায্য করেছেন।’ ওই ৮১ মিলিয়ন ডলার পরে পেসোতে রুপান্তরিত হয়ে ক্যাসিনোর জুয়ার আসরে চালিয়ে দেয়া হয়। আটটি মানি লন্ডারিং মামলার প্রত্যেকটির জন্য দিগুইতোকে ৪-৭ বছরের জেল ও ১০ কোটি ৩০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ শাখা থেকে সুইফট সিস্টেম হ্যাক করে ফিলিপাইনের আরসিবিসির জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ওই অর্থ স্থানান্তর করে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মধ্যে মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। এই বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে মামলা করেছে। মার্চে আরসিবিসি উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে। তবে আরসিবিসি বলছে, তারা আশা করছে পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করা হবে।