সাইফুল ইসলাম : চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশায় দিনপার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা। ধান বিক্রি করে লাভতো দূরের কথা খরচের টাকাও তুলতে পারছেন না তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬২ হাজার ৩শ ৬০ হেক্টর আর অর্জিত হয়েছে ৬২ হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আশানরুপ ফলন হলেও ধান উৎপাদনে প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদনের দাম বেশি থাকায় লোকমানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। গত মৌসুমের ধান ব্যবসায়ীদের ঘরে জমে থাকায় ধান ক্রয়ে তেমন আগ্রহ নেই। তাই বাজারে ধানের চাহিদা না থাকায় দাম কমেছে ধানের। দক্ষিণ বঠিনা এলাকার কৃষক মঙ্গলু বর্মন জানান, ৫০ শতাংশ জমিতে ধান আবাদে খরচ হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকারও বেশি। বিদ্যুৎ চালিত পানির পাম্পে ব্যবহারে উৎপাদন স্থান ভেদে ১ হাজার টাকা কমেছে। আমাদের মতো বর্গা চাষির ক্ষেত্রে কৃষকের জমির ভাড়া ৬ হাজার টাকা সে অনুযায়ী ৫০ শতাংশ জমিতে মোট উৎপাদন খরচ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ৫০ শতাংশ জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ মণ, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২-১৪ হাজার টাকা। ৫০ শতাংশ জমিতে উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক ৬-৮ হাজার টাকা। বাজারে সবকিছুরই মূল্য বেশি শুধু কৃষকের উৎপাদিত ফসলের কোনো মূল্য নেই। ধান বিক্রি করে লাভ তো দূরে থাক উৎপাদন খরচ তুলতে পারছে না। এরপর আর ধান চাষ করা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন।
ঠাকুরগাঁও উপজেলা চাল কল মালিক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন বর্তমানে বাজারে যে ধান আমদানি হচ্ছে তা কাঁচা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আদ্রতায় আনলে ৪০ কেজিতে ১০ কেজি কমে যাবে। গত আমন মৌসুমের ধান এখনও মিলারদের কাছে মজুত থাকায় ধান ক্রয়ের আগ্রহ নেই মিলারদের। মিলাররা যে পরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছে তাতে গত মৌসুমের ধান শেষ হবে না। তবে সরকার যদি আরও বরাদ্দ দেয় তাহলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন বলেন, ধান উৎপাদনের জন্য সকল উপকরণ সময়মত পাওয়ায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষিদের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান বাজারে যে দাম তাতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তবে ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে পারলে লাভবান হতে পারে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান