মতিনুজ্জামান মিটু : দেশে যে পরিমাণ ফল উৎপাদন হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। এরমধ্যে মধুমাসের চার মাস অর্থাৎ জুন-সেপ্টেম্বরে ফল বেশি উৎপন্ন হয়। শীত মৌসুমে ফল তুলনামূলকভাবে কম পাওয়া যায়। এফএও প্রকাশিত কান্ট্রি নিউট্রেশন পেপার (এফএও ২০১৪) এর বরাতে ‘বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ (বারটান) এর একটি সূত্র জানান, ২০১০ সালে মাথাপিছু ফল গ্রহণের পরিমাণ দৈনিক ৪৪.৮ গ্রাম। যেখানে মাথাপ্রতি দৈনিক কমপক্ষে দরকার ১০০ গ্রাম ফল। যদিও ফল গ্রহণের পরিমাণ এখন অনেক বেড়েছে তবুও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম।
ফলের এ ঘাটতি মেটাতে ডিএইর আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’সহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ফল উৎপাদন ও পুষ্টি উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ডিএই’র আওতায় সারা দেশে ৭৩টি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রতি বছর মানসম্পন্ন চারা ও কলম উৎপাদন ও বিতরণ করা হয়। ২০১৫ সালের সেপ্টম্বর মাসে ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে জুন’ ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের মোট ২,১৩,৯৬৬টি প্রদর্শনী বাগান স্থাপন করা হয়েছে।
প্রকল্পটির মধ্যবর্তী মূল্যায়ন প্রতিবেদনের বরাতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কনসালটেন্ট (প্ল্যানিং, মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন) ও পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন বিভাগ প্রধান মোসাম্মৎ রোকেয়া বেগম জানান, স্থাপিত প্রদর্শনী বাগানগুলোর মধ্যে রয়েছে, বাণিজ্যিক মিশ্র ফল বাগান ৬,২৮৮টি, বাণিজ্যিক ফল বাগান প্রদর্শনী ১,৫৫০টি, বসতবাড়ি বাগান প্রদর্শনী (ক্লাস্টার) ৮,৬৬৬টি, ড্রাগন বাগান প্রদর্শনী ৬২০টি, বসতবাড়িতে নারিকেল বাগান প্রদর্শনী ৪৬,৬৩৮টি, এক্সোটিক হাইব্রিড বা খাটো জাতের নারিকেল চারা প্রদর্শনী ১,৫০,০০৪টি এবং নতুন ফল বাগান প্রদর্শনী ২০০টি।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রতি বছর প্রায় এক কোটিরও বেশি ফলদ বৃক্ষ লাগানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শুধু গাছ লাগানোই নয়, গাছ লাগানোর পর তার পরিচর্যার মাধ্যমে কিভাবে মানসম্পন্ন ফল উৎপাদন, আহরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ করা যায় তার প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান