রমজান আলী : দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম জাতির অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। গ্রামপ্রধান এই দেশে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে ব্যস্ত সবাই। শহুরে মানুষরাও স্বজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরেন। আর জীবিকার তাগিদে শহরে বসবাস করা মানুষগুলোর অংশগ্রহণ এবং স্বজনদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে গ্রামীণ জনপদ। বাড়তে থাকে অর্থ প্রবাহ। বাড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা।
জানা গেছে, ঈদ সামনে এলে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়ে থাকেন। তবে এবারে ঈদের আগেই অর্থাৎ রমজানকে সামনে রেখে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আলোচ্য সময়ে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১ হাজার ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগে বছরে অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালের মে মাসে প্রবাসীরা দেড় হাজার মিলিয়ন ডলার দেশে পাঠান। অর্থাৎ প্রতিবছরে ঈদে বাড়ে বৈদেশিক রেমিট্যান্স। আর এসব অর্থ সরাসরি যায় গ্রামে। এতে গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন খাতে বিপুল অংকের অর্থ ঘন ঘন হাতবদল হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকা- যেমন বাড়বে, তেমনি চাঙ্গা হয়ে উঠবে গোটা অর্থনীতি। রোজার অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করতে বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এগুলো এখন খুচরা বাজারে বেচা-কেনা হচ্ছে। তবে ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হয় নতুন পোশাক কেনায়। মার্কেটগুলোয় ছেলে-মেয়ে, আবালবৃদ্ধবণিতার চাহিদা অনুযায়ী পোশাক বেচা-কেনা হচ্ছে। এ সময় অভ্যন্তরীণ পোশাকের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ে। যে কারণে গ্রামীণ জনপদে এই সময়টা হয়ে ওঠে শহুরে জীবনের মতো।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, দেশে গার্মেন্ট শিল্পে কাজ করেন প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। আর তাদের প্রায় ৯০ শতাংশই গ্রাম থেকে জীবিকার তাগিদে শহরে আসেন। তারা সবাই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেন। মূলত এসব গার্মেন্ট শ্রমিক ঈদকে সামনে রেখে নিজেদের উপার্জন সঞ্চয় করেন। আর স্বজনদের সঙ্গে ভালোভাবে ঈদ কাটানোর প্রতীক্ষায় থাকেন। তবে এবার ঈদে দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটি পেতে পারেন সরকারি-আধা সরকারি অথবা বেসরকারি চাকরিজীবিরা। এ কারণে এই লম্বা ছুটিতে এরইমধ্যে গ্রামে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন অনেকেই। লম্বা ছুটির কারণে গ্রামে ভোগব্যয়ের পরিমাণও অনেক বেড়ে যাবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান