টানা ২ সপ্তাহ কয়লা না পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড স্থাপন করলো যুক্তরাজ্য
নূর মাজিদ : আঠারো শতকের শিল্পবিপ¬ব পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ে, বর্তমানেও যা চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো পুরোপুরি পরিহার করতে পারেনি। সেদিক থেকে ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ সৃষ্টি করলো যুক্তরাজ্য। শিল্পবিপ¬ব পরবর্তী ২ শতাব্দী পরে দেশটি টানা দুই সপ্তাহ কয়লার বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রেখে এই রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
প্রথম শিল্পবিপ¬ব চলাকালীন সময়ে সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যেই স্টিম ইঞ্জিনের আবির্ভাব হয়। যা থেকে পরবর্তীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন গতিশীলতা লাভ করে। তবে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় ৩টা ১২ নাগাদ এই কয়লা পরিহারের দুই সপ্তাহের ট্রেক রেকর্ড অর্জন করে যুক্তরাজ্য। একইসঙ্গে, দেশটি অন্যান্য শিল্পেও কয়লার ব্যবহার উল্লেখজনকভাবে কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে। ফলে সার্বিকভাবেই যুক্তরাজ্যে মোট কয়লার ব্যবহার কমেছে সাম্প্রতিক সময়ে।
১৮৮২ সালে সর্বপ্রথম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয় লন্ডনের হলবর্ন এলাকায়। ২০১৫ সাল নাগাদ অবশ্য পরিবেশদূষণ কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনে দেশটি। এসময় যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত বিদ্যুতের মাত্র ৫ শতাংশ চাহিদা উৎপাদন করা হতো কয়লা পুড়িয়ে। ২০১২ সালের তুলনায় এটি একটি বড় অগ্রগতি। কারণ সেই সময় দেশটির ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতো কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো। যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এনার্জি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্র্যাটেজি প্রতিবেদনের বরাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
মূলত, দেশটির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে এখন গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র দিয়ে স¤পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ালে কয়লার চাইতে অর্ধেক কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয়। এছাড়াও, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অবিশ্বাস্য অগ্রগতি অর্জন করেছে যুক্তরাজ্য। ২০১৮ সাল নাগাদ দেশটির মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ২৮ শতাংশই এসেছে সৌর এবং বায়ুশক্তি থেকে। বিশেষ করে, গত ১৪ মে নাগাদ দেশটি নিজস্ব চাহিদার ২৫ শতাংশ সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। সম্পাদনা : ইকবাল খান