মতিনুজ্জামান মিটু : এখনও দেশের ফল উৎপাদনে বসতবাড়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে উৎপাদিত ফলের শতকরা ৫৩ ভাগই হয় বসতবাড়ীতে। বাকী ৪৭ ভাগ ফল বাগানের চাষ থেকে আসে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ জানান, দেশে ১ কোটি ৫১ লাখ কৃষিভিত্তিক বসতবাড়ী রয়েছে। যেখানে অন্যান্য ফসল ছাড়াও প্রতিবছর নারিকেলসহ বিভিন্ন ফল চাষ করে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। পরিকল্পণামাফিক একটি বাড়ি, একটি খামার ব্যবস্থাপনায় ফলদবৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে পুষ্টি তথা খাদ্য ঘাটতি মেটানো যাবে। এই সঙ্গে এতে পরিবেশকে নির্মলকরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগও মোকাবেলা করা সম্ভব।
দেশের ২.৪৩ লাখ হেক্টর জমিতে আম, কাঠাঁল, কলা, পেঁপে, লিচু, পেয়ারা, কুল, কমলা, লেবু, সফেদা, আমড়া ও নারিকেলসহ ৭০ প্রজাতির ফলের আবাদ হয়ে থাকে। এখানে মোট চাষযোগ্য জমির মাত্র ১.৬৬ ভাগ জমিতে ফল চাষ হয়। কিন্তু জাতীয় অর্থনীতিতে মোট ফসল ভিত্তিক আয়ের প্রায় শতকরা ১০ ভাগ ফল থেকে আসে। বর্তমানে দেশে বছরে ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার মেট্রিক ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাগানের বাইরে অর্থাৎ বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থানে ২৬.০২ লাখ মেট্রিক টন(৫৩%) ও বাগানে উৎপাদন হয় ১৭.৪৫ লাখ মেট্রিক টন (৪৭%) ফল।
দেশে বর্তমানে প্রতিদিন মাথাপিছু ফলের প্রাপ্যতা রয়েছে ৭৮ গ্রাম। কিন্তু দিনে মাথাপ্রতি ফলের দরকার ২০০ গ্রাম। এই হিসেবে দেশের মোট ৭১ লাখ মেট্রিক টন ফলের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন ঘাটতি ৩৫% অর্থাৎ ২৭.৫৩ লাখ মেট্রিক টন।
সম্প্রসারণ কাজের মাধ্যমে ফলচাষের আওতাধীন জমির পরিমান বাড়ানো সম্ভব। পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, চট্টগ্রাম ও দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় এখনও প্রচুর পতিত জমি আছে। সেখানে সঠিক ও কার্যকর পরিকল্পনার মাধ্যমে ফল ও ফলদবৃক্ষের বাগান স্থাপন করে পতিত জমি চাষের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে ফলের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে। যা দেশের দারিদ্র বিমোচনে বিরাট অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই প্রফেসর। সম্পাদনা : ইকবাল খান