আমাদের বিশ্ব • আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে
সোহেল রহমান : আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। চলতি অর্থবছরে এসব খাতে মোট ৩৭ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিলো। এবার সর্বোচ্চ ভর্তুকি পাচ্ছে ‘তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস’ (এলএনজি) খাত। এ খাতে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এর পরেই রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্যের মধ্যে খাদ্য খাতে ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। বিশেষত এবারই প্রথম এলএনজি খাতে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি রাখা হচ্ছে। বিদেশ থেকে অধিক মূল্যে আমদানি করে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামে বিক্রির করা কারণে ভর্তুকির এই অর্থ ‘বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন’ (পেট্রোবাংলা)-কে দেয়া হবে। তবে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে ভর্তুকি পরিমাণ কমতে পারে।
জানা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এলএনজি খাতে ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়ে গত বছর অক্টোবরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় পেট্রোবাংলা। এর বিপরীতে চলতি বছরের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো এলএনজি খাতে ১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয় সংস্থাটিকে।
প্রসঙ্গত দেশের গ্যাসের চাহিদা পূরণ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমানে বিদেশ থেকে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি করছে সরকার। কিন্তু এতেও সঙ্কট কাটছে না। ফলে আগামীতে এলএনজি আমদানির পরিমাণ দ্বিগুণ করার কথা ভাবছে পেট্রোবাংলা। আর সে কারণেই ভর্তুকি বাড়ছে।
এলএনজি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাবের পাশাপাশি এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতেও ৩০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বাড়ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিট প্রতি মূল্যের ঘাটতি বাবদ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-কে দেয়া হবে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। তবে এলএনজি আমদানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি দেয়া হলেও জ্বালানি তেল আমদানিতে তথা ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন’ (বিপিসি)-কে ভর্তুকি হিসেবে কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না।
অন্যান্যের মধ্যে খাদ্য খাতে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিলো ৪ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ খাদ্য খাতে ভর্তুকি কমছে ১০৪ কোটি টাকা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান
জানা যায়, আসন্ন বাজেটে প্রণোদনা খাতে শুধু রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে নগদ প্রণোদনার হার ১ শতাংশ বাড়ছে। বর্তমানে তৈরি পোশাক খাত ৪ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা পেয়ে থাকে। এক শতাংশ বাড়ানোর ফলে এই খাতে নগদ সহায়তার হার বেড়ে গিয়ে দাঁড়াবে ৫ শতাংশে। ফলে এ খাতে সরকারের ব্যয় বাড়বে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে রফতানি খাতে নগদ সহায়তা বাবদ ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। বর্তমানে ৩৫টি রফতানিমুখী পণ্য এই নগদ সহায়তা পেয়ে থাকে বলে জানা যায়।
এছাড়া চলতি বাজেটে পাটজাত পণ্য খাতে পৃথকভাবে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সম-পরিমাণ অর্থ এবারও বরাদ্দ রাখা হতে পারে।
অন্যান্যের মধ্যে এবারও কৃষি খাতে ৯ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হবে।
এদিকে এবারের বাজেটে নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দের কোনো হেরফের হচ্ছে না। নগদ ঋণ খাতে চলতি অর্থবছরের সম-পরিমাণ অর্থাৎ ৫০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা যায়।