আবু আহমেদ বললেন, অর্থশাস্ত্র অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো উচিত
আমিরুল ইসলাম : আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্রের বর্তমান সুদহার কমছে না। তবে বড় ধরনের সংস্কারের আওতায় আসছে সঞ্চয়পত্র খাত। এরই অংশ হিসাবে ১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সারাদেশে অনলাইন লেনদেন। সরকারের সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমানো ও সঞ্চয়পত্র খাতে সংস্কারকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, অর্থশাস্ত্র অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো উচিত। তিনি বলেন, সরকার মনে করে যারা অবসরপ্রাপ্ত, সুবিধাবঞ্চিত তারা সঞ্চয়পত্র কিনে তাদের সংসার চালায়। এখন এটা সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এর ফলে দুইটা অসুবিধা হচ্ছেÑ ১. সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে সুদের যে দায়বদ্ধতা জমা হচ্ছে সেটা বর্তমানে রেভিনিউ বাজেটের প্রায় বিশ শতাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এটা একসময় অব্যবস্থাপনার পর্যায়ে চলে যায় কিনা, এটা নিয়ে একটা সন্দেহ রয়েছে। ২. মার্কেট থেকে বেশি সুদ থাকলে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। কারণ এটাকে রেফারেন্স সুদ হিসাবে ধরা হয়। এটা সরকারের সম্পূর্ণ নীতিগত ব্যাপার। যদি সুদহার কমানো না হয় এটাকে রেস্ট্রিকটেড করা উচিত। সরকার যাদের দিতে চায়, তারাই যেন কিনতে পারে। এখন যেভাবে ঢালাওভাবে ক্রয় করতে পারছে এটা ঠিক নয়। কারণ সরকার সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে ঋণ নিচ্ছে এটা দরকার নেই। সরকার অন্যান্য উৎস থেকে আরো কম সুদে ঋণ নিতে পারে। কিছু মানুষকে এর দ্বারা সুবিধা দিতে চাইলেও মার্কেট থেকে সুদ বড়জোর এক থেকে দেড় শতাংশ বেশি হতে পারে। এর থেকে বেশি হওয়া উচিত নয়।
তিনি আরো বলেন, এখানে সরকার চাচ্ছে ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার কমাতে, কিন্তু এর জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমাতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করার রাস্তা খোলা রাখলে সবাই অনলাইনেই ক্রয় করবে। সরকার যাদের সুবিধা দিতে যাচ্ছে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে তাদের আগে চিহ্নিত করতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত ও বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য হলে সেটা উল্লেখ করে দিতে হবে। এখন তো দোকানদার, ব্যাংকার, সবাই ক্রয় করতে পারে। অথচ সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। এখন দুই হাজার টাকা হলে টিআইএন পাওয়া যায়, কিন্তু টিআইএন অনুযায়ী কেউ ট্যাক্স রিটার্ন করে না। লাখো লাখো ব্যক্তির টিআইএন আছে, কিন্তু তার চারভাগের একভাগ লোক ট্যাক্স রিটার্ন করে। টিআইএন নেয়া মুখ্য বিষয় নয়। জাতীয় পরিচয়পত্র তো সবারই আছে। টিআইএন নিতে পারে পরিচয়ের জন্য। আমি সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কামানোর পক্ষে। সরকার এটাকে সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামের একটা অংশ হিসাবে মনে করে। বৃদ্ধদের ভাতা দেয়া ও সস্তায় খোলা বাজারে চাল বিক্রি করার মতো।