ডিজিটাল ট্যাক্সের আওতায় আসছে ফেসবুক ঐক্যমত্য জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে
নূর মাজিদ : বিশ্বব্যাপী তথ্য-প্রযুক্তিখাতের বৃহৎ কো¤পানিগুলো সরকারি কর ফাঁকি দেয়ার ক্ষেত্রে যে সকল ব্যবস্থাগ্রহণ করে, উন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০র অর্থমন্ত্রীরা তা সীমিত করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন । একইসঙ্গে, তারা একটি একক ডিজিটাল ট্যাক্স আইন কার্যকর করার বিষয়েও একমত পোষণ করেছেন। এর ফলে ২০২০ সালের মাধ্যমে একটি কার্যকর কর আইন প্রবর্তন করা হবে, যা ফেসবুক, অ্যামাজন এবং গুগলের মতো শীর্ষ প্রজুক্তিগুলোর প্রদেয় করের পরিমাণ বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। এই সিদ্ধান্ত অবশ্য আয়ারল্যান্ডের মতো অতিরিক্ত কম বাণিজ্যিক কর আইনের মাধ্যমে প্রযুক্তিখাতে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্টকারী উন্নত দেশের জন্য সাময়িক ক্ষতির কারণও হবে। সূত্র : সিএনবিসি।
রোববার জাপানের ওসাকায় জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রীরা এই বৈঠকে অংশ নেন। এসময় তারা ফেসবুক, গুগুল এবং অ্যামাজনের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি কো¤পানিগুলো সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ক্ষেত্রে যে সকল পন্থা অবলম্বন করে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইতোপূর্বে, গতবছরের মাঝামাঝি সময় থেকে, এই সকল কো¤পানির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কম বাণিজ্যিক কর রয়েছে এমন সব দেশে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে তাদের প্রদেয় করের পরিমাণ কমিয়ে আনার খবরে তীব্র সমালোচনা হয়। এই ধরনের ব্যবসায়িক নীতি কর ফাঁকি দেয়ারই শামিল, বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের সরকার।
বৈঠকের পর জাপানি অর্থমন্ত্রী তারো আসো সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে কর ফাঁকি ঠেকাতে আমরা দুটি মূলনীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিচ্ছি। এ দুটি নতুন কর ব্যবস্থার মূলস্তম্ভ হিসেবেও কাজ করছে। ’ আসো রোবাবারের বৈঠকে সভাপতিত্বও করেন। এসময়য় তিনি আরো বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে সকল প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে, তার কাঠামো অনেকটাই ¯পষ্ট নয়। তবে ধীরে ধীরে সেগুলো একটি কাঠামোর রূপ নিচ্ছে।’
এদিকে কম বাণিজ্যিক কর রয়েছে এমন সব দেশ বা অঞ্চলে বাণিজ্যিক মুনাফা স্থানান্তরে সবচাইতে কট্টর বিরোধিতা এসেছে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে। দেশদুটির অভিযোগ তাদের নাগরিকদের ভোক্তা হিসেবে ব্যবহার করলেও সীমিত কর দিয়ে সিংহভাগ মুনাফা সরিয়ে ফেলছে প্রযুক্তি কো¤পানিগুলো। এই বিরোধিতা দেশদুটিকে বৈদেশিক বাণিজ্যের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৈরী প্রতিযোগিতার সম্মুখীন করেছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রগুলো বৃহৎ প্রযুক্তি কো¤পানিগুলোই মূলত ডিজিটাল ট্যাক্সের আওতায় সবচাইতে বেশি প্রভাবিত হবে। যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের নিজস্ব ডিজিটাল ট্যাক্স আইনে মার্কিন ইন্টারনেট কো¤পানিগুলোকেই মূল লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, অভিযোগ মার্কিন সরকারের।
বৃহৎ প্রযুক্তি কো¤পানিরা বলছে, তারা ইউরোপে কর আইন মেনে চলে। এইক্ষেত্রে সীমিত পরিমাণে হলেও তারা বাণিজ্যিক কর দেয়। বাকি মুনাফা আয়ারল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গের মতো কম বাণিজ্যিক কর রয়েছে এমন দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেয়া হয়। সম্পাদনা : ইকবাল খান