ব্যাংকিং খাতে সংস্কারে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেখতে চান অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশ্লেষকরা
হ্যাপি আক্তার : ব্যাংকিংখাতে শৃঙ্খলা ফেরানোই অর্থমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশ্লেষকরা। ব্যাংকিংখাতের সঙ্গে বাজেটের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও এবারের বাজেটে এ খাতের সংস্কারে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেখতে চান তারা। তাদের মতে, ভঙ্গুর ব্যাংকিংখাত নিয়ে উন্নত অর্থনীতি গড়ার স্বপ্ন আত্মঘাতী। ডিবিসি নিউজ, ৯:০০।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণের পরিমান ছিলো ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আদায় ও পুনঃতফসিল মিলিয়ে যা ডিসেম্বর প্রান্তিকে কমে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকায়। তবে ২০১৮ সালেই খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে ২৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে খেলাপি ঋণের বোঝা ছাড়িয়েছে সোয়া ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে বলেন, খেলাপি ঋণ একটা ক্রনিকে এবং ক্যান্সারে পরিনত হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে সকল দিক থেকে বিবেচনা করে, আলাদা আলাদাভাবে কাটা তুলতে হবে। তবেই এর সমাধন আসবে।
অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকিংখাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও শৃঙ্খলা ফেরানোই হবে অর্থমন্ত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আর বাজেটে থাকতে হবে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং খাতে ঋণের প্রভাব কেন পড়ছে? লাভ কেন কমে যাচ্ছে? তার মানে মৌলিক কিছু বৈসাদৃশ্য আছে। টানাপোড়েন আছে। সে জন্য ব্যাংকিং খাতে এ দূরাবস্থা। যে স্বল্প পরিমান আমানত বাড়ছে, সেখান থেকে সরকার যদি একটি বড় অংশ নিয়ে নেয়, তাহলে ব্যক্তি খাতের জন্য কি থাকবে? এমন প্রশ্ন ড. আহসান এইচ মনসুরের।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে ব্যক্তি খাতের প্রবাহ কমতে কমতে ১২শতাংশে নেমে এসেছে। ডিপোজিটের প্রবাহ ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। যেটা আগে ছিল ২২ শতাংশ।
ব্যাংকিংখাতে শৃংখলা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর ভূমিকা চান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি, আবার সঠিক লোকজন ঋণ পায় না। সুদের হার অত্যন্ত বেশি। এর মধ্যেই আমরা আবর্তিত হচ্ছি। ব্যাংকিং সেক্টরের ব্যাপারে অবশ্যই সুস্পষ্ট নীতিমালা বাজেটে থাকতে হবে। সেন্ট্রাল ব্যাংককে আরো শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাংকখাতের ভিত শক্ত করতে না পারলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির সুফল কাজে লাগানো সম্ভব হবে না। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন