সপ্তাহে ২ ঘণ্টা প্রকৃতির সান্নিধ্য স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিস্ময়কর অবদান রাখে, গবেষণা প্রতিবেদন
নূর মাজিদ : শুধু দীর্ঘস্থায়ী ভ্রমণ বা ক্যা¤িপং নয়, আপনি যদি নির্মল প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় নিশ্চুপ বসে থাকেন, তাতেও উপকারে কোন কমতি হবেনা। সপ্তাহে অন্তত দুই ঘণ্টাই এজন্য যথেষ্ট। এতটুকু সময়, প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটালে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের দারুণ উপকার হয়। উদ্যান, সাগরতীর এবং বনে ভ্রমণে স্বাস্থ্যের যে উপকার হয়, তা বহু পুরনো তথ্য। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ঠিক কতক্ষণ প্রকৃতির সঙ্গে কাটালে উপকৃত হওয়া যায়, তা তুলে ধরা হয়। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
এই গবেষণা করে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার মেডিক্যাল স্কুল। যেখানে দেখা যায়, সপ্তাহে প্রকৃতিতে কাটানো মাত্র দুই ঘণ্টা সপ্তাহে দেড় ঘণ্টা ব্যায়াম করার সমান উপকার দেয়। আবার, পাঁচদিন ধরে ফল ও সবজি খেলে যে উপকার পাওয়া যায়, তারও সমান উপকার পাওয়া যাবে এই দুই-ঘন্টায়। বিষয়টি যেমন বিস্ময়কর, ঠিক তেমনই চমকপ্রদ।
যুক্তরাজ্য জুড়ে ২০ হাজার সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে এই গবেষণা স¤পন্ন করা হয়। ওই সাক্ষাৎকারে তাদের আগের সপ্তাহের কর্মকা-ের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বিবরণী নেয়া হয়। অর্থাৎ, তারা কি খেয়েছেন, কোথায় গিয়েছেন ইত্যাদি। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে যারা প্রকৃতির সান্নিধ্যে এক সপ্তাহে খুব কম সময় বা কোন সময় কাটাননি, তাদের এক-তৃতীয়াংশ তাদের শারীরিক অবস্থা সন্তোষজনক নয় বলে জানান। আর এসব ব্যক্তিদের মাঝে অর্ধেক জানান, তারা নিজেদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নন। অর্থাৎ, তাদের মানসিক শক্তিও পড়তির দিকে।
সেই তুলনায় যারা প্রকৃতিতে দুই ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাটিয়েছেন, তাদের মাঝে ইতিবাচক সব প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এদের মাঝে মাত্র সাত ভাগের একভাগ মনে করেন, তারা শারীরিকভাবে খুব একটা সবল নন। এবং এদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ নিজ জীবন নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন। মোদ্দাকথা, এখানে একটি বড় পার্থক্য চোখে পড়ার মতো।
এই বিষয়ে গবেষক দলের প্রধান ড. ম্যাথিউ হোয়াইট বলেন, দুই ঘণ্টা প্রকৃতির সঙ্গে কাটানোর সুফল বয়স্ক বা তরুণ, ধনী ও দরিদ্র, শহুরে বা গ্রাম্য জনগোষ্ঠী সকলের মাঝেই সমানভাবে কাজ করে। এটি এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। এমনকি যারা দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে ভুগছেন বা শারীরিক অক্ষমতার শিকার তাদের জন্যেও এই সুফল লক্ষ্মনীয়। তাই আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বড় বিষয় হলো প্রকৃতির সঙ্গে থাকা। শারীরিক কসরত মুখ্য নয়, বেঞ্চে বসেই প্রকৃতিকে দেখতে দেখতে উপকৃত হবেন আপনি। সম্পাদনা : ইকবাল খান