যৌন হয়রানির অভিযোগে ডা. শওকতকে পপুলার হাসপাতালে বসতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের
মাসুদ আলম : রাজধানীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ শওকত হায়দারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে তাকে চেম্বারে বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শনিবার ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ত্বক জনিত (ব্রণ) সমস্যা নিয়ে পরিচিত এক চিকিৎসকের কাছে যান। এসময় চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লেজার কসমেটিক সার্জন ডা. শওকত হায়দার ওই তরুণীকে চুমু ও úর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ ঘটনার ওই ছাত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানম-ি পপুলার হাসপাতালের ২ ভবন পর পূর্বপাশে সিটি ব্যাংক ভবনের লিফটের ২-এ বসেন তিনি। পপুলার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নামের তালিকায় এখনো তার নাম ঝুলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে চেম্বার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও রোগি দেখার জন্য সিরিয়াল নিচ্ছেন তার ব্যক্তিগত সহকারি। ডা. শওকত হায়দারের ব্যক্তিগত সহকারি বলেন, স্যার চেম্বারের বসবেন।
হাসপাতালের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, শওকত হায়দার ফুলটাইম চিকিৎসক ছিলেন না। তিনি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার ২ দিন পার্টটাইম বসতেন। তিনি পপুলারে চাকরি করতেন না। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে আর চেম্বারে বসতে দেওয়া হবে না। এমনকি ভবিৎষতেও তাকে পপুলারের কোনো শাখায় বসতে দেওয়া হবেনা। ডাক্তার শওকত কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, মেয়েটা তার বন্ধুর মেয়ের বন্ধু। এরকম হবার কথা নয়। তবে ওই তরুণী যদি তার ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়ে থাকে তার জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। শওকতের গ্রামের বাড়ি যশোরে।
ধানম-ির থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, এ ঘটনায় এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
ওই তরুণী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ত্বক জনিত সমস্যা নিয়ে পরিচিত একজনের রেফারেন্সে পপুলার হাসপাতালের ওই ডাক্তারের কাছে যান তিনি। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসার প্রয়োজনে আরও কয়েকবার ওই ডাক্তারের কাছে যান তিনি। সর্বশেষ গত শনিবার ওই তরুণী ফোনে ডা. শওকতকে জানান তার ত্বকের সমস্যা আবার বেড়েছে, রাতে তিনি চেম্বারে বসবেন কি না? এসময় ওই ডাক্তার চেম্বারেই আছেন জানিয়ে মেয়েটিকে যেতে বলেন। পরে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ওই তরুণী জানতে চান তার সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান আছে কি না। এসময় শওকত বলেন, চাইলে একটি ইনজেকশন দেয়া যেতে পারে। তবে ইনজেকশনটি কোমরে দিতে হবে। মেয়েটির ইতস্ততভাব দেখে ওই ডাক্তার তাকে বলেন, কাপড়ের উপর দিয়েই ইনজেকশন দেয়া যাবে। ইনজেকশন দিতে রাজি হয়ে পেসেন্ট টেবিলে শুলে ওই ডাক্তার মেয়েটির বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন। গাল দেখার ছলে ওই চিকিৎসক তরুণীকে চুম্বন করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসককে একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। চিকিৎসক শওকত হায়দার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস করেছেন। পপুলার ছাড়াও তিনি ইবনে সিনা হাসপাতালে বসেন।