সৌরভকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়েছে, বললেন সোহেল তাজ
মাসুদ আলম : সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। কোনোভাবেই আমরা আশা করতে পারি না, কোনো নাগরিক গুম কিংবা অপহৃত হোক। কার কী পরিচয় তা মুখ্য বিষয় নয়। এ ধরনের ঘটনা কারও জন্য কাম্য নয়। আজকে আমার ভাগ্নে, কালকে হয়তো আপনার ভাই হতে পারে। আরেক দিন হয়তো আপনার সন্তান হতে পারে। সৌরভকে উদ্ধারে কাছ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা তার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। বিষয়টি আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপিকে জানিয়েছি। র্যাব পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ডিআরইউ’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা মো. ইদ্রিস আলম। গত ৯ জুন চট্টগ্রাম মিমি সুপার মার্কেটের সামনে থেকে সৈয়দ ইফতেখার আলম ওরফে সৌরভ অপহৃত হয়।
লিখিত বক্তব্যে সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান বলেন, আমি একজন মা হিসেবে আমার হারানো ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সৌরভের তৈরি সিনেমা ‘বেঙ্গলী বিউটি’ দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করে। সে সময় সওদা নামে এক মেয়ের সঙ্গে পরিচয় ও যোগাযোগ শুরু হয়। পর্দাশীল পরিবারের সদস্য সওদা মোবাইল ফোনেই বিবাহ সম্পন্ন করার প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি না হলে সওদা নিজের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এর মধ্যে সওদার অমতে পরিবার সওদাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। তবে সে বিয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ভেঙে যায়। এরপর থেকে সওদার বাবা আজাদ চৌধুরী আমার ছেলেকে দোষারোপ করে এবং আমার ছেলেকে ও আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরই জেরে ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সৌরভকে উত্তরা র্যাব সদর দপ্তরে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। মোবাইলের সব ডাটা ডিলেট করে সেখানেও সওদার ব্যাপারে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
সৌরভের মা আরও জানান, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় ওসি সৌরভকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। এক সপ্তাহ পর এনএসআইয়ের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে এক রেস্টুরেন্টে বৈঠক হয়। সেখানে সৌরভের ঘটনা তদন্ত করার কথা জানানো হয়। সেখানেও সওদার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। কোন কোন দেশ ঘুরেছে সৌরভ তা জানতে চায়। পরে তারা প্রাপ্ততথ্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানোর কথা বলে চলে যায়। ২০১৮ সালের ১৬ মে বনানীর বন্ধুর বাসা থেকে ডিজিএফআই ও র্যাব পরিচয়ে একদল লোক সৌরভকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর গত ১৭ মে রাত পৌনে ১২টায় একই কায়দায় ফেরত দিয়ে যায়। এ দীর্ঘ সময় তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সওদা বিষয়ে।
তিনি আরও বলেন, গত ৮ জুন দুপুরে র্যাব ফোন করে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেডি করতে বলে। এরপর ৯ জুন বিকেল ৩টার দিকে তার সঙ্গে র্যাব আবার যোগাযোগ করেন। সৌরভকে মিমি সুপার মার্কেটের আগোরার সামনে থাকতে বলেন। সৌরভ সেখানে গেলে তাকে তুলে নেয়া হয়। এরপর আর ফিরে আসেনি সৌরভ। আমরা সৌরভকে ফিরে পেতে চাই।