উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিক্ষোভের মুখে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
শ.ম.গফুর : গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার রোহিঙ্গাদের এ বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এসময় রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালিতে যোগদান করেন। র্যালিটি মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কুতুপালং রেজি: ক্যাম্পে আসার পথে একদল রোহিঙ্গা ‘আমরা শরণার্থী জীবন যাপন করতে চায় না, আমরা স্বদেশে ফিরতে চাই’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে র্যালিটি আটকে দেয়। প্রায় আধাঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা রোহিঙ্গাদের শান্ত করেন এবং রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কুতুপালং রেজি: ক্যাম্পে বৈঠকে বসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সেখানে রোহিঙ্গারা তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাদের আশ^স্ত করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে অংশ নেয়া উখিয়ার কুতুপালং রেজি: ক্যাম্পের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি মো. ইউনুচ আরমান বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাদের বলেছেন- বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আমেরিকার সরকার ৭ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা দিয়েছে এবং আরও অব্যাহত থাকবে। এর জবাবে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে আমি বলেছি, আমাদের সহযোগিতার দরকার নেই। রোহিঙ্গাদের জন্য দেয়া মার্কিন ডলার বিভিন্ন এনজিও নানাভাবে খরচ করছে। সব সাহায্য রোহিঙ্গাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে না। এই মুহুর্তে আমাদের দরকার চীন সরকারের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে সম্মানের সঙ্গে আমাদের ফেরত পাঠানো। কারণ, বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। এই দেশে থাকলে যেকোনো সময়ে স্থানীয়দের সঙ্গে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আমরা এই দেশে থাকতে আসেনি। বাংলাদেশ সরকার আমাদের জায়গা দেয়ায় আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন দাবি দাওয়া উত্থাপন করেছি মার্কিন সরকারের কাছে। তিনি আমাদের আশ^স্ত করেছেন এবং রোহিঙ্গাদের পাশের থাকার পুনরায় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
এসময় ‘ইউএনএইচসিআর’র বাংলাদেশের প্রধান স্টিফেন করলিস, কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালামসহ সরকারী কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন এনজিও’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান