রেললাইন ও সেতুগুলো ব্রিটিশ আমলের হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ
সমীরণ রায় : একটি দেশের রেল যতো শক্তিশালী। ওই দেশ ততো বেশি উন্নত। বাংলাদেশ যেহেতু উন্নয়নশীল দেশ, সেই হিসেবে এদেশের রেলও উন্নত হবে। কিন্তু এদেশের রেললাইন ও রেলসেতু-কালভার্টগুলো ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা। এগুলো যদিও প্রতিবছর রক্ষনাবেক্ষণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘদিন তা করা হচ্ছিলো না। ফলে অনেক জায়গায়ই রেললাইন ও রেলসেতু-কালভার্টগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।
গত রোববার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনায় রেলমন্ত্রী বলেন, দেশের বেশিরভাগ রেললাইনগুলো মাঝে মধ্যে সংস্কার করা হলেও সেতু-কালভার্টগুলো তেমনভাবে করা হয় না। তবে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, ব্রিটিশ আমলে করা রেললাইন ও সেতু-কালভার্টগুলো নতুন করে নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে বর্ষার আগেই রেলের সমস্ত সেতু-কালভার্ট সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত রেলসেতুগুলো নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
উপবন এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী বলেন, আজ দুপুরে আমি কুলাউড়ায় পৌছে স্থানীয় হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেলে যাবো। আর এই দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করবো। তবে নিহতদের বাড়ি দুরে দুরে হলে সেক্ষেত্রে একজনের বাড়ি হলেও যাবো। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেকের জন্য ক্ষতিপুরণ বাবদ ১ লাখ টাকা করে দেয়া হবে। আর যারা আহত হয়েছেন তাদের সব চিকিৎসার খরচ রেলপথ মন্ত্রণালয় বহন করবে। পাশাপাশি আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
উপবন এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। এখানে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে। যদিও সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে সেতু ভেঙ্গে পড়েছে। যদি সেতু ভেঙে যেতো, তাহলে ২০-২১ ঘন্টার মধ্যে রেল চলাচল স্বাভাবিক হতো না। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশের ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো চিহ্নিত করা হবে। চিহ্নিত করে তা যত দ্রুত সম্ভব নতুন করে তৈরি করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে যাবেন। এ সফরের মধ্য দিয়ে হয়তো অর্থনৈতিক যোগানোর বিষয়টি সমাধান হবে। সমাধান হলেই কাজ শুরু হবে। আমরা আশা করছি এ বছরের শেষের দিকে নতুন রেলসেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
রেলে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও যাত্রী বেশি হয়, এতে অনেক সময় ট্রেন লাইনচ্যুত হয় জানিয়ে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ট্রেনে সাধারণত ১ হাজার যাত্রীর ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় ২ হাজারের বেশি যাত্রী উঠেন। কখনও কখনও তিনগুণ যাত্রী উঠে। এতে করে ট্রেনের যাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হয়। যদিও দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনে প্রায় ১৫০০ যাত্রী ছিলো। তবে সবার উচিত স্ব স্ব অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব