বৃক্ষমেলায় ১৫-২০ লাখ টাকা লাভের আশা নার্সারি মালিকদের
জিয়ারুল হক : জমতে শুরু করেছে শেরেবাংলা নগরের বৃক্ষমেলা। মেলায় অংশ নেয়া নার্সারি মালিকরা আশা করছেন এখন থেকে প্রতিদিন বিক্রি বাড়বে। দর্শনার্থীর সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে বিক্রিও। একই সঙ্গে গাছের অর্ডারও বাড়বে। জাগো নিউজ
নার্সারি মালিকরা বলছেন, ‘নগরীর মানুষ আগের চেয়ে বেশি সচেতন। ছাদে ফল ফুলের বাগান এখন আর শখ নয়, ব্যবসাও বটে। তারা আশা করছেন, গতবারের চেয়ে এবার বেশি লাভ নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। মেলায় সরেজমিনে কথা হয় ইয়ামিন নার্সারির মালিক মো. হাসানের সঙ্গে। গতবার মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পুরস্কার পেয়েছিলেন। এবারও আশা করছেন প্রতিযোগিতায় স্থান পাবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে হাসান বলেন, ‘গতবার পুরস্কার পাওয়ার কারণে এবার আরও ভালো জায়গা পেয়েছি। এখন প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার একলাখ ছেড়ে যাবে। মেলার একমাসে ১৫-২০ লাখ টাকা বিক্রির টার্গেট করেছি।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারলে খরচ বাদে নিট আট লাখ টাকা লাভ হবে। যারা ডাবল স্টল নিয়েছে তারা লাভও ডাবল করবেন।’
কথা হয় মেটাল বায়োটেক নার্সারির কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মূল নার্সারি দিনাজপুরে। এ নার্সারিতে দেশি, ফল ফুলের পাশাপাশি বিদেশি ফল ও ফুল এবং উন্নত মানের সবজির চারা এবং বীজ উৎপাদন ও বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া কেউ ছাদে বাগান করতে চাইলে তারা ছাদ বাগান করে দিতেও প্রস্তুত। কল করলেই তারা চলে যাবেন ছাদে বাগান করে দিতে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্র্যাক নার্সারি ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতাম। সেখানে দেখেছি তারা বৃক্ষ মেলায় এসে বড় একটা প্রচার পায়। এ ছাড়া মেলার এক মাসে প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা বিক্রি হয়। সিঙ্গেল স্টলের মালিকরাও ৮-১০ লাখ টাকা লাভ করবেন।’
ইয়াজ উদ্দিন অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। বাড়ির ছাদে বাগান আছে। সে জন্য তিনি একটি ড্রাগন, একটি শরফা-মেওয়া, একটি নাসপাতি ও একটি বারমাসি কার্ডিমন আম গাছ কিনেছেন। সব মিলে উনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার গাছ কিনেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ছাদের বাগানে অনেক প্রকার ফল আছে। বাজার থেকে আমি তেমন ফল কিনি না। এ ছাড়া গ্রামের বাড়ি ধামরাইয়েও প্রচুর দেশি ফলের গাছ রোপণ করেছি। এ কারণে ফল বাজার থেকে কিনতে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘অবসরে যাওয়ার পর থেকে নিজেই গাছের যত্ম করি। অন্য কারো প্রয়োজন হয় না।’
কথা হয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সহকারী বন সংরক্ষক খন্দকার মো. জাকারিয়ার সঙ্গে। মেলার তথ্যকেন্দ্রে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘পাঁচবছর আগে এ বৃক্ষ মেলায় যে পরিমাণ ফল, ফুল, বনজ এবং ঔষধি চারা বিক্রি হতো এখন তার চাইতে ১০ গুণ বেশি বিক্রি হয়। কারণ মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচেতন। বিশেষ করে ঢাকা শহরে যাদের ছাদ আছে তারা কিছু না কিছু গাছ বা শাক সবজি চাষ করেন। ঢাকা শহরে বাস করে কিন্তু ঢাকার আশে পাশে গ্রামের বাড়ি। তারা অনেকে বৃক্ষ মেলা থেকে গাছ কিনে গ্রামে বাগান করছে।’
তিনি বলেন, ‘মেলায় ১০২টি স্টল (সিঙ্গেল) আর ৭০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিটি স্টল বরাদ্দ বাবদ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ১০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।’