কোরবানীর ঈদকে ঘিরে পশু মোটাতাজাকরণে ওষুধ ব্যবহার প্রতিরোধে একযুগে কাজ করছে খাদ্য অধিদপ্তর, পুলিশ ও বিজিপি
নুর নাহার : দিনাজপুরের হিলিতে সীমান্ত রক্ষিবাহিনী বিজিপি বিপুল পরিমাণে এমন ওষুধ উদ্ধার করেছে যা পশু মোটাতাজাকরণে ব্যবহার করা হয়। বিজিপি বলছে, ঈদকে সামনে রেখে এমন ওষুধের চোরাচালান বেড়েছে। আর প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর বলছে, এধরণের ওষুধ খাইয়ে মোটাতাজা করা গরুর মাংস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যে কারণে বিজিপি আর পুলিশের সাথে মিলে তারাও অবৈধভাবে গরু মোটাকরণ,উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ ঠেকাতে কাজ করছেন। বিবিসি বাংলা ৭:৩০
আসছে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে ভালো দামের আশায় পশুকে মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন খামারীরা। তবে গরু মোটাকরণে স্টেরয়েড কিংবা হরমোনসহ নানা ধরণের অবৈধ ওষধের ব্যবহাও লক্ষ করা যায়।
বাংলাদেশে এ ধরণের ওষুধ ও উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ায় এগুলো আসে চোরাচালানির মাধ্যমে। সম্প্রতি এধরণের একটি বড় চালান আটক করেছে বিজিপি।
বিজিপির হিলির মংলা বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, সামনে কোরবানী তাই দেখা যায় মানুষ তাদের গরুগুলো মোটাতাজাকরণ করছে। এখন এর চাপ একটু বেড়ে ঈদের আগ পর্যন্ত থাকবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা তো থাকবেই।
তবে ঈদের বাকি এই এক মাসে ওষুধ দিয়ে গরুকে স্বাভাবিকভাবে মোটা করা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম ভেটেনারী এন্ড এ্যানিমেলস সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. একে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, গরু মোটাতাজাকরণে আধুনিক যে পদ্ধতি স্টেরয়েড বা হরমোন এগুলো ব্যবহার করা যায় না। করলেও সীমাবদ্ধতা আছে। বেশি করা যাবে না। এক মাসে কাঙ্খিত ফলও পাওয়া যাবে না। এটি ওই পশুর জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমন মানুষের জন্যও ক্ষতিকর।
চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ প্রয়োগে মোটা করা গরুর মাংস মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর। এর ফলে তবে পারে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগও।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ড. এবি এম খালেদুজ্জমান বলেন, চিকিৎসার জন্য কোনো প্রকার হরমোন বা স্টেরয়েড খাওয়ানোা পরপরই হলে তা ক্ষতির কারণ হয়। এন্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েডের যে ৪-৫ দিনের ডোজ সেটির পরে যদি বাজারে আসলে তাহলে আমাদের জন্য নিরাপদ। কিন্তু উদরকাল না মেনে তাড়াতাড়িই বাজারে আনা হয় তাহলে আমাদের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে । কিডনী ও পেটে নানা ধরনের রোগ দেখা যায়।
বাজারে এধরণের পশুর প্রবেশ ঠেকাতে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. হিরেশচন্দ্র ভৌমিক বলেন, আমাদের আর্ন্তজাতিক নজরদারি আছে। আমরা পুলিশ ও বিজিপির সাথে মিলে গত তিন বছর যাবৎ কাজ করছি।
মৎস ও পশু খাদ্যের আইনে ধারার ১৪তে বলা হয়েছে গবাদি পশুর হৃষ্টপুষ্ট করণে কোনো প্রকার হরমোন, স্টেরয়েড এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্নরূপে নিষিদ্ধ। সম্পাদনা : ইকবাল খান