যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারে এমন বক্তব্য অস্বীকার করলেন ওবায়দুল কাদের
আনিস তপন : সাম্প্রদায়িক শক্তি, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে- বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া এমন খবরকে অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের কথা আমি কখনোই বলতে পারি না। কারণ আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার আদর্শ, বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের চেতনার পক্ষের একটি দল। তাই স্বাধীনতাবিরোধী কাউকে মনোনয়ন দেয়া, এদের সদস্য করার বিষয়ে দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এখানে আপসকামিতার প্রশ্নই উঠে না। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে তাদের ব্যাপারে আমাদের তো প্রশ্ন থাকবেই। এখানে আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্ন, এখানে আমরা আপস করতে পারি না। তাই নতুন যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে, এর মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী কেউ আসতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী এই শক্তিগুলোর সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই আওয়ামী লীগ আপস করবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুদ্ধাপরাধীর পরিবার থেকে আমরা সদস্য সংগ্রহ করি না। দলের সদস্য পদ এরা নিতে পারেন না। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের যে নীতিমালা, সেখানে স্পষ্ট করে এ বিষয়ে বলা আছে। এখানে আমি নতুন করে কোনো বক্তব্য রাখতে পারি না। এটা আমাদের পুরনো সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তে আমরা অটল।
বিএনপি-জামায়াতের ঘরের কেউ যদি আওয়ামী লীগে আসতে চায়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী? জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক বিষয়টাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দেই। কাজেই সাম্প্রদায়িকতার দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা যাদের দেখি, তারা জামায়াত হোক বিএনপি হোক, আমরা একইভাবে দেখি।
বরগুনায় রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার সঙ্গে দলীয় কারও সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা? সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে যে-ই হোক এসব ব্যাপারে। কোনও ছাড় নেই। এসব বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে শৈথিল্য প্রকাশেরও কোনো সুযোগ নেই। দলের সভাপতি অত্যন্ত কঠোর। এর আগে নাশকতার সঙ্গে যুক্ত দলীয় অনেক নেতা এখন কারাগারে আছে, জেল খাটছে, মামলার পেছনে দৌড়াচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।