বিনোদন ও বাণিজ্যের নতুন মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও ক্লিপ
ইয়াছির আরাফাত : মানুষের হাতের মুঠোয় বসে ভালোই উপভোগ করছিলেন ইউটিউবভিত্তিক বিনোদন শিল্প। সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে এখনও। তবে অতিসম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হলো বিশ্বের প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের ‘ভিডিও অন ওয়াচ’ নামের নতুন অপশন। যার দাপট সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে অন্তর্জাল দুনিয়ায়। তাই নয়, ফেসবুকের এই ‘ভিডিও ক্লিপ’ জোয়ারে গা ভাসাচ্ছেন দেশের সিংহভাগ শিল্পী-প্রযোজক-নির্মাতা এবং দর্শক। দর্শকরা বিষয়টিকে দেখছেন, বিনোদনের বাড়তি মাত্রা হিসেবে। অন্যদিকে কনটেন্ট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নতুন একটি মাধ্যম। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন
ফেসবুকের ভিডিও ক্লিপ ট্রেন্ডের মাধ্যমে মূলত ‘চটুল’ বিষয় উঠে আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি ভিডিওর ক্যাপশন দেখলেই যেটি স্পষ্ট হওয়া যাবে। ‘গার্লফ্রেন্ডকে থাপ্পড় মারার জ্বালাটা কী হতে পারে দেখুন?’, ‘মুরগি চোর ধরা খেয়ে কী বলে দেখুন’, ‘কী মেয়েরে বাবা! পুলিশ নিয়ে বয়ফ্রেন্ড এর বাড়িতে হাজির!’, ‘পাশের বাসার ভাবী যখন বী-মভ হয়!’, ‘আবাসিক হোটেল’, ‘গুলশানে যেভাবে ছেলে ভাড়া করে মেয়েরা’ ইত্যাদি। দেশের নাটক-চলচ্চিত্র থেকে কেটে নেওয়া ফেসবুকে এমন চটুল শিরোনামের ভিডিওর সংখ্যা প্রায় ৬০ ভাগ! বাকি ৪০ ভাগে রয়েছে কমেডি ও সামাজিক নানা ঘটনার চিত্র। রয়েছে মিউজিক ভিডিওর চুম্বক অংশও।
এসবের ভিড়েও নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘বড় ছেলে’ নাটকের একটি আবেগী ক্লিপ ব্যাপক ভাইরাল হয় ফেসবুকে। এটি প্রকাশ হয় সিডি চয়েস-এর পেজে। এটি ছিল ফেসবুক ভিডিও অপশনের প্রথম দিককার ক্লিপ। যদিও আবেগের সেই জায়গাটা এখন আর নেই। কারণ, বেশিরভাগ কনটেন্ট প্রোভাইডাররা এখন ছুটছে সস্তা জনপ্রিয়তা আর সহজে টাকা আয়ের পথে। এ প্রসঙ্গে নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান বলেন, ‘প্রথমত এটাকে আমি মনে করি মূল কনটেন্টের (নাটক বা সিনেমা) প্রমোশন অপশন হিসেবে। পজেটিভ যে কোনও প্রমোশনই ভালো। খুব সুন্দর একটা ক্লিপ তুলে এনে দর্শকদের মধ্যে কাজটি সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করাই এর মূল কাজ। কিন্তু এটার নামে যদি বাজে ক্যাপশন দিয়ে ক্লিপ প্রকাশ করা হয়, অথবা একটা ভালো কাজের ছোট্ট একটি অংশ তুলে দিয়ে ভিন্ন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয় তাহলে তো বিষয়টি মাঠে মারা যাওয়ার অবস্থা। এর দায় তখন নির্মাতার ওপরে এসে পড়ে। অথচ এসব কাজের বেশিরভাগই হয় প্রযোজকদের পক্ষ থেকে।
এদিকে ‘ফেসবুকে ভিডিও আপ করলেই প্রচুর ডলার আসে’ এমন হুজুগে অসংখ্য সাধারণ মানুষও বিভিন্ন নাটক-সিনেমা-গানের বিশেষ অংশ কেটে প্রকাশ করছেন ফেসবুকে। যার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাদের প্রতি দেশের অন্যতম প্রযোজনা-পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি মিউজিকের আইটি এক্সপার্ট সালেহীন খান শাওন বললেন, ‘এসব কাজ যারা আগে ইউটিউবে করেছে, এখন তারাই সেটা ফেসবুকে করার চেষ্টা করছে। যা তারা ভুল করছে। কারণ, ইউটিউবের চেয়ে ফেসবুক এখন এ বিষয়ে বেশি কঠোর। ফেসবুকের এই ভিডিও ট্রেন্ড নিয়ে বেশ পজেটিভ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশেই নয়, এই ট্রেন্ডটা সারা দুনিয়ায় চলছে এখন। বিশ্বের নামকরা যে সিরিজগুলো হয়, সেগুলোর ক্লিপ আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতেই পাই। আগ্রহ নিয়ে দেখি। কারণ, সিরিজটি তো দেখতে পারছি না। এটা আসলে পজেটিভ।