মাসুদ আলম : রাজধানীর ওয়ারীর বনগ্রামে শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৬) ছাদ ঘুরিয়ে দেখানোর কথা বলে ৮তলার লিফট থেকে ছাদে নিয়ে যায় প্রতিবেশী হারুন অর রশিদ। এরপর নবনির্মিত ৯তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে ধর্ষণ করে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে থাকে সায়মাকে মৃত ভেবে গলায় রশি দিয়ে টেনে রান্নাঘরের সিঙ্কের নিচে রেখে পালিয়ে যায় হারুন। রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই সায়মার হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন। এসময় সায়মার বাবা আব্দুস সালামও উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল বাতেন বলেন, রোববার সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পূর্ব গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হারুন ওই ভবনের ৮ম তলায় বসবাসকারী পারভেজের খালাতো ভাই। পারভেজের বাসায় গত দুইমাস ধরে থেকে তার রংয়ের দোকানে কাজ করে আসছিলো হারুন।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মাকে বলে সায়মা ৮তলায় যায় ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের মেয়ের সঙ্গে খেলতে। কিন্তু পারভেজের স্ত্রী জানায় মেয়ে ঘুমাচ্ছে তাই সেখান থেকে বাসার উদ্দেশ্যে লিফটে ওঠে সায়মা। লিফটেই সায়মার সঙ্গে দেখা হয় হারুনের। হারুন ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে ঘটনার পরিণাম দেয়। এরপর সে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকায় চলে যায়। সাময়ার বাবা আব্দুস সালাম বলেন, আমার মেয়েকে দুভাবে নির্যাতিত করা হলো। আমি সর্বোচ্চ তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আসামির ফাঁসি কার্যকর চাই। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, যাদের সন্তান আছে তারা এসব কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তির কাছ থেকে কীভাবে আপনার সন্তানদের দূরে রাখবেন বিষয়টি ভেবে দেখবেন। আমি আমার মেয়েকে দেখে রাখতে পারিনি। সন্ধ্যায় সায়মা তার মাকে ১০ মিনিটের কথা বলে বাহিরে যায়। এরপর আমার মেয়েটা আর ফিরলো না। ঘরে মেয়ের কাপড়-চোপড়, ছবি দেখে আর ঠিক থাকতে পারি না। আমার পুরো পরিবারটা বিধ্বস্ত হয়ে গেলো।
উল্লেখ্য, ওই ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় সায়মারা থাকতো। স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী সায়মা চার ভাইবোনের মধ্যে ছিল সবার ছোট। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান