রোহিঙ্গা সঙ্কট বাংলাদেশের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠবে
নূর মাজিদ ও শ.ম. গফুর : বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন এ যোগ দিতে দুদিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকা আসেন তিনি। রোহিঙ্গা শিবির সফর করে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব গভীর শঙ্কা ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, একসময় বাংলাদেশ আর রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে চাইবেনা, কারণ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্যেই অসহনীয় হয়ে উঠবে। একইসঙ্গে, তিনি এই সংকটে বাংলাদেশকে ঠেলে দেয়ায় মিয়ানমারের তীব্র নিন্দা করেন। সূত্র : বাসস।
মুন বলেন, মিয়ানমার যে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী নয়, তা ইতিমধ্যেই তাদের কাজের মাধ্যমে ¯পষ্ট হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ তার মাসুল দিয়ে যাচ্ছে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার মাধ্যমে। তবে অস্থায়ীভাবে এভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশের জন্য খুবই কঠিন। আগামীদিনে বাংলাদেশ এটা সহ্য করতে পারবে না।
জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক কূটনীতিক বান কি মুন। তিনি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ঘাড়ে একটি বিশাল বোঝা হিসেবেও উলে¬খ করেন। মিয়ানমারের সমালোচনা করে মুন বলেন, নির্যাতন এবং নিধন বন্ধ করে মিয়ান্মারর উচিৎ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া। রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরার অধিকার দিতে হবে।
সাবেক এই মহাসচিব ক্যা¤েপ রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আবাসনগুলো ঘুরেফিরে দেখেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, এ সময় তার সাথে ছিলেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রোগ ব্রেন্ডে, মার্শাল আইল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টালিন জর্জিয়েভা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ স্কেফার, ত্রাণ সচিব শাহ কামাল, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, সাবেক জাতিসংঘের মহাসচিব উখিয়ার কুতুপালং ২০নং ক্যাম্প ও ১৭নং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। সাবেক মহাসচিবের আগমন উপলক্ষ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক সহ ক্যাম্প অভ্যন্তরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে উখিয়া-টেকনাফে ৩০টি ক্যাম্পে প্রায় ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, আবাসন বিষয় সম্পর্কে দেখতে আসেন বাং কি মুন। তিনি ১৭ ও ২০ নং ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি দেখে করে রোহিঙ্গা সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেন। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান