জলবায়ু পরিবর্তনে সহায়তা করছে অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং
নূর মাজিদ : নেটফ্লিক্সে নাটক বা সিনেমা কিংবা ইউটিউবে ছোট্ট বেড়াল ছানার ভিডিও দেখা এর কোনটাই আপনার সময় সাশ্রয় করেনা। তবে পৃথিবীকে বাঁচাতে চাইলে এই অলসতা কাটিয়ে নিজের ফোন বা ক¤িপউটারের আসক্তি কাটিয়ে উঠুন। পরিমিত করুণ অনলাইন ভিডিও দেখার প্রবণতা। তাহলেই রক্ষা পাওয়ার কিছুটা সুযোগ পাবে বিশ্ব। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফরাসি জলবায়ু গবেষণা সংস্থা- দ্য শিফট প্রজেক্ট জানায়, অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং প্যারিস জলবায়ু চুক্তিকে সরাসরি লঙ্ঘন করছে। এই বাণিজ্যের বার্ষিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক ইউরোপীয় দেশের মোট বার্ষিক নিঃসরণের সমান ক্ষতি করছে। দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।
২০১৮ সালে অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের কাজে নিয়োজিত সার্ভারের এবং অন্যান্য অবকাঠামো ৩০ কোটি মেট্রিক টন সমান কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী ছিলো। যা সারা বিশ্বের বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের ১ শতাংশ এবং ¯েপনের মতো শিল্পোন্নত দেশের মোট নিঃসরণের সমান। ১০ ঘণ্টা দীর্ঘ একটি উচ্চমানের ভিডিও ফুটেজে বিশ্বের সকল ইংরেজি ভাষার উইকিপিডিয়া পেজের চাইতে বেশি তথ্য থাকে। এই বিপুল পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে সম্প্রচারে নিয়োজিত ক¤িপউটিং ব্যবস্থা সচল রাখতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করতে হয়।
বর্তমানে বিশ্বের মোট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ৮০ শতাংশই নানা প্রকার বিনোদন এবং বিজ্ঞাপনী ভিডিও দখল করে নিয়েছে। এই তথ্য বলছে, অব্যাহত হারে আমাদের মাঝে ইন্টারনেটে ভিডিও দেখা প্রবণতা বাড়ছে। এই প্রবণতা কাম্য নয় এবং পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করতে হলে, এই অভ্যাস জথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। এমন পরামর্শ দেয়া হয় শিফট প্রজেক্টের গবেষণা প্রতিবেদনে।
অনলাইন ভিডিও ট্রাফিকের ২৭ শতাংশ আবার পর্ণগ্রাফিক ভিডিওর দখলে। এবং ২০১৮ সালে পর্ণশিল্প ৮ কোটি টন কার্বন নিঃসরণের জন্যে দায়ী ছিলো। এটা ফ্রান্সের সকল আবাসিক বাড়ির বার্ষিক কার্বন দূষণের সমান। এবং বৈশ্বিক নিঃসরণের দশমিক ২ শতাংশের সমান।
নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজন প্রাইমের মতো অনলাইন বিনোদন স্ট্রিমিং বার্ষিক ১০ কোটি টন গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের জন্যে দায়ী। যেটা চিলির মোট নির্গমন মাত্রার সমান এবং বৈশ্বিক দূষণের দশমিক ৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনটি আরো জানায়, বিশ্বের ডিজিটাল শিল্প এখন মোট কার্বন নিঃসরণের ৪ শতাংশের জন্য দায়ী। যা বিশ্বের বেসামরিক বিমান চলাচল খাতের দূষণের চাইতেও বেশি। এবং ২০২৫ সাল নাগাদ এই দূষণ ৮ শতাংশে উন্নীত হবে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব