রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার ১০ বছর পর মুক্তি পেলেন শিক্ষক আজমত আলী
শরিফুল ইসলাম : রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার পরেও আইনি জটিলতায় ১০ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেলেন শিক্ষক আজমত আলী।
হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশের কপি হাতে পেয়ে জেল সুপার মকলেছুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তাকে মুক্তি দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামের ইজ্জতউল্লাহ সর্দারের ছেলে আজমত আলী টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরের ভেঙ্গুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন । ১৯৮৭ সালে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একটি হত্যা মামলায় ১৯৮৯ সালে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজমত আলীকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দেন আদালত।
এ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে সাধারণ ক্ষমার প্রার্থনা করে আজমত আলীর পরিবার। সেই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগষ্ট জামালপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান আজমত আলী।
পরে ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামী আজমত আলীকে নি¤œ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। হাজির না হলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমত আলীকে প্রেপ্তার করে নি¤œ আদালতে সোর্পদ করে পুলিশ।
২০১৮ সালের অক্টোবরে আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার মুক্তি চেয়ে আইনি সহায়তা পেতে সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইডে আবেদন করেন। পরে সে আবেদন পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আপিল বিভাগের রায় পুন.বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজমত আলীর মেয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশের পর আইনি জটিলতায় বিনাদোষে তার বাবা ১০ বছর কারাভোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এখন আমার বাবা জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দশ বছর কি আমরা ফিরে পাবো? এই বলে তার বাবাকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সদ্যমুক্তি পাওয়া আজমত আলী বলেন, আইনি জটিলতায় বিনাদোষে আমি বৃদ্ধ বয়সে কারাগারে ১০ বছর মানবেতর জীবন অতিবাহিত করেছি। কারো জীবনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।
জামালপুর কারাগারের জেল সুপার মকলেছুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নিদের্শের কপি পাওয়ার মাত্রই তাকে মুক্তি দেয়া হয়। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান