যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২৬ হাজার কোটি ডলার
নূর মাজিদ : যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের তথ্যানুসারে ইঙ্গ-মার্কিন অর্থনীতির দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৬ হাজার কোটি ডলার। এর মাঝে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানি করে ১৪ হাজার ১১০ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা। যার বিপরীতে যুক্তরাজ্য থেকে ১২ হাজার ১২০ কোটি ডলারের আমদানি করে দেশটি। ফলে সকল ধরণের পণ্য এবং সেবা ব্যবসায়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ডলার। তবে এই বাণিজ্যের ভারসাম্যকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে আরো সুবিধাজনক করে তুলতে পারে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট। সূত্র : সিএনবিসি।
টানা তিন বছর ধরে আলোচনা এবং চুক্তির পর পার্লামেন্টের বাঁধার মুখে আটকেছে ব্রেক্সিট চুক্তি। দ্বিতীয় দফা সংশোধনেও থেরেসা মে সমর্থন পাননি আইনপ্রণেতাদের। মের পদত্যাগের পর যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা পূরণ করতে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা জোরদার হলেও, সেটা ব্রেক্সিট সংকটের সমাধানের পথ দেখাচ্ছে না। অবস্থা দৃষ্টে গত সপ্তাহেই দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান দীর্ঘ অর্থনৈতিক আঘাত আসার হুঁশিয়ারি দেন। যার কারণে দেশটির উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ব্যাপক হারে কমবে। বাড়বে উৎপাদন খরচও। এটা স্থানীয় ভোক্তা বাজারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলবে।
অচিরেই ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে চলেছে। কংগ্রেসের সামনে দেয়া বক্তব্যে ফেড প্রধান জেরোম পাওয়েল যা এক প্রকার নিশ্চিতই করেছেন। এই অবস্থায় মার্কিন ডলারের দর কমবে, এবং রপ্তানিতে বাড়তি প্রণোদনা আসবে। ব্রেক্সিটের পর ব্রিটিশ পাউন্ডের দর কমলেও সেটা ডলারের পর্যায়ে আসতে বেশ সময় লাগবে। বরং, দুই দেশের মুদ্রার এমন সমান অবস্থানে আসার সম্ভাবনা কিছুটা কম।
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্যের বাজার হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যার পরেই একক দেশ হিসেবে অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট সন্দেহাতীতভাবে ইইউতে ব্রিটিশ পণ্য এবং সেবা রপ্তানির ঘাটতি তৈরি করবে। কারণ অনেক উৎপাদক ও কো¤পানি ব্রেক্সিটের কারণেই যুক্তরাজ্য থেকে ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশে উৎপাদন কেন্দ্র সরিয়ে নিচ্ছে। এই অবস্থায় বেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে আরো বাণিজ্যিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমান ট্রা¤প প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ইতিমধ্যেই অন্যান্য বাণিজ্য সহযোগী দেশের সঙ্গে এই ধরণের দর কষাকষির নজির স্থাপন করেছে। চীনের কথা বাদ দিলেও এর মাঝে মেক্সিকো এবং কানাডার মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশীরাও আছে।
ইতিপূর্বে ট্রা¤প বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের একটি বিশেষ স¤পর্ক আছে। এবং ব্রেক্সিটের পর আমরা দেশটির সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্যচুক্তি করব। কিন্তু, এই বিশেষ স¤পর্ক বাণিজ্যে যুক্তরাজ্যকে লাভবান করবে এমন বিশ্বাস নেই অনেক অর্থনীতি বিশারদের মাঝেই।
আইএইচএস মাকির্টের ভাইস চেয়ারম্যান ড্যান ইয়ারগিন বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে এই বিশেষ স¤পর্ককে (বাণিজ্যে) আরো বিশেষ করে তোলা।’ সম্পাদনা : ইকবাল খান