ব্লু ইকোনোমির সুফল পেতে ১৯শ কোটি টাকার প্রকল্প
মতিনুজ্জামান মিটু : আন্তর্জাতিক সমুদ্র বিষয়ক জাতিসংঘের ট্রাইবুনালের রায়ে বাংলাদেশের সার্বভৌম একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল ১১৮,৮১৩ বর্গ কিলোমিটার নির্ধারিত হওয়ায় এই বিশাল জলরাশি হতে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ও সুনিল অর্থনীতির(ব্লু ইকোনোমি) সম্ভাবনা, সুফল ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ঋণ সহায়তায় নেওয়া হয়েছে ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প নামের এক মেগা প্রকল্প। যা বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৮৬৮. ৮৬ কোটি টাকা। যার মধ্যে রয়েছে প্রকল্প সাহায্য ১৫৮৮.৩৯ কোটি টাকা এবং জিওবি ২৮০.৪৭৫ কোটি টাকা।
দেশের ৪টি বিভাগের ১৬টি উপকূলীয় জেলার ৭৫টি উপজেলার ৭৫০টি ইউনিয়নে এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উপকূলীয় ১৬টি জেলায় মৎস্যজীবী, দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মৎস্য নির্ভরশীল পরিবার এ প্রকল্পের অভীষ্ট সুফলভোগী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তর প্রকল্পটি সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, দেশের উপকুলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্যের অবদান ও মৎস্য মজুদ অবস্থা পুনরুদ্ধার, মৎস্যখাতে ব্যক্তি মালিকানাধীন বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিবেশ সৃষ্টি করবে। এতে মৎস্য খাতের স্থায়িত্বশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।
সুনীল অর্থনীতি : সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগ শীর্ষক এক প্রবন্ধে প্রকল্পের পরিচালক, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট ও উপপ্রকল্প পরিচালক হাসান আহম্মেদ চৌধুরী, নাসির উদ্দিন মো. হুমায়ুন ও মনিষ কুমার মন্ডল জানান, দেশের উপকুলীয় সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের অধিকতর আর্থিক সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে সামুদ্রিক মৎস্য মজুদ ও পরিবেশের উৎকর্ষ সাধনপূর্বক দারিদ্র্য হ্রাসকরণ ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবকায়ন উন্নয়ন করাই এই প্রকল্পের অভীষ্ট লক্ষ্য। প্রকল্পটির উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে; সামুদ্রিক একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) মজুদ জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে চিংড়ি, তলদেশীয় ও ভাসমান প্রজাতির মৎস্যের মজুদ নিরুপন জোরদারকরণ, বিজ্ঞানভিত্তিক মৎস্য মজুদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা উন্নতী করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক (সরকারি ও বেসরকারি) সামর্থ বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও বাণিজ্যিক মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে কার্যকর পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি পদ্ধতির বাস্তবায়ন, উপকুলীয় অঞ্চলে মৌলিক অবকাঠামোর উৎকর্ষ সাধন এবং কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আহরিত ও উৎপাদিত মাছের ভ্যালু চেইন উন্নয়ন ও মানের আদর্শ সমুন্নত রাখা প্রভৃতি। বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ সহায়তায় প্রথম পর্যায়ে ৪টি কম্পোনেন্টের মাধ্যমে এ প্রকল্পের কার্যক্রম চলবে। প্রকল্প পরিচালক হাসান আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, মূলত প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে। ৫ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৩ সালের জুন মাসে।