খেলাপি ঋণ আদায়ে নমনীয় হওয়ার প্রস্তাব আবুল বারকাতের
রমজান আলী : গত ২২ জুলাই সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, খেলাপি ঋণ অবশ্যই কমেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের জুনে অধিকাংশ ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমে এসেছে।
এব্যাপারে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে হলে সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে খেলাপি ঋণ আদায় করতে গেলে সেটা ভালো হবে না। একজন ব্যবসায়ী কি অবস্থায় রয়েছে তা আগে যাচাই-বাছাই করে তার কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায় করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে এটা যেমন ঠিক। তাকে আবার ব্যবসাও করতে দিতে হবে এটাও ঠিক। খেলাপি ঋণ আদায় করার সময় অবশ্যই নমনীয় হতে হবে। দেখতে হবে কেউ ইচ্ছা করে খেলাপি হয়েছে কিনা। তার জন্য এক রকম পদক্ষেপ নিতে হবে। আর যে প্রকৃত ব্যবসা করছে কিন্তু ব্যবসায় তেমন ভালো যাচ্ছে না, তার জন্য এক রকম পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে খেলাপি ঋণ আদায় হবে।
তিনি আরো বলেন, মাঝে মাঝে শুনতে পাই যে, যারা খেলাপি হয়েছে তাদের ছবি প্রকাশ করা ও ভোট না দিতে দেয়া এবং বিমানে চলাফেরা করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে। তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও শুনি। এভাবে খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব নয়। কারণ সামাজিকভাবে মানসম্মানের দিক চিন্তা করে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারে, তখন কি হবে। তাতে দেশেরই ক্ষতি হবে। তাই খেলাপি ঋণ আদায় করার সময় যতোটুকু নমনীয় হওয়া যায় ততোই ভালো।
উল্লেখ, চলতি বছরের মার্চে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। গত ১০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়Ñপ্রথম প্রান্তিকে (জানু-মার্চ) ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকাকে শ্রেণিকৃত ঋণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, এখন মোট ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ খেলাপি ঋণ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ছিলো ১০ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের মার্চে শতাংশ হিসাবে তা ছিলো ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান