বিশ্বের বিনিয়োগ তহবিলগুলো তারল্য সঙ্কটের টাইম বোমার উপর বসে আছে
নূর মাজিদ : চলতি বছরেই যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান মার্ক কার্নি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, যে সকল বিনিয়োগ তহবিল তাদের গ্রাহকদের নিয়মিত বিরতিতে মুনাফা উত্তোলন করতে দেয়ার অঙ্গীকার করেছে, তারা স¤পূর্ণ মিথ্যা বলছে। কারণ দীর্ঘমেয়াদে এই অবস্থা কোনভাবেই স্থায়ী হবেনা। কার্নির সঙ্গে স¤পূর্ণ একমত পোষণ করেছেন, ইউরোপের সর্ববৃহৎ স¤পদ ব্যবস্থাপনা সংস্থা আমুন্ডি এসএ’-র প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা পাস্কেল ব¬ংক। আমুন্ডি প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ইউরো বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারের স¤পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। সূত্র : ব্লুমবার্গ।
ব¬ংক বলেন, একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমাদের অনেক বড় সমস্যা রয়েছে। যেটা আগামী দিনে নিশ্চিতভাবেই তারল্য সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তহবিল বাজারের তারল্য ধারণার চাইতেও দ্রুত গতিতে উবে যেতে পারে। এমনকি তাপপ্রবাহে আইসক্রিম যতো তাড়াতাড়ি গলে যায় তার চাইতেও বেশি গতির হতে পারে এমন প্রবণতা।
বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিনিয়োগ ব্যাংকগুলোকে তাদের ব্যালেন্স শীটগুলি জোরদার করতে বাধ্য করেছে। এটি তাদের তরফ থেকে সিকিউরিটিজ বাজারে প্রতিশ্রুত মূলধনের পরিমাণকে হ্রাস করেছে । তাই অনেক ক্ষেত্রে, নগদ আর্থিক তারল্য ইতিমধ্যেই কমছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ মানের দীর্ঘমেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের মুনাফা রিটার্ন ২০১৪ সালের পর বর্তমানে সবচেয়ে কম লাভ দিচ্ছে।
ব¬ংক আরো বলেন, বাজারে যেখানে স¤পদমূল্য তৈরি হয় বা বিক্রি করা হয় তা সকলের জন্যেই উন্মুক্ত। সবাই এখানে নিজেদের পছন্দনুসারে বন্ডের মতো ফাইন্যান্সিয়াল প্রডাক্ট কেনাবেচা করতে পারেন। কিন্তু, যখন এই ধরনের লেনদেন কমে আসে তখন তা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বাড়তি মূল্যবৃদ্ধি বা হ্রাসের ঝুঁকি কমায়। তবে এই ঝুঁকি স¤পূর্ণ হারিয়ে যায়না বরং স্থান পরিবর্তন করে মাত্র।
ব¬ংক বলেন, ‘দেনা ব্যবসায়ের বাজার যার ওপর বিনিয়োগ তহবিলগুলো নির্ভরশীল এখন একটি খাড়া পাহাড়ের কিনারায় দাড়িয়ে। এক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এই খাদের নিচে পড়ছে আর সংকট আরো জটিলাকার ধারণ করছে। কিন্তু, এটি একটি পদ্ধতিগত সমস্যাও বটে। বিনিয়োগ ব্যাংকগুলি অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ তবে ঝুঁকিগুলি দেনা কেনার দিকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’ সম্পাদনা : ইকবাল খান