জুয়েল খান : বর্তমান সরকার অনেকদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। গত দশ বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে চার গুণ। বিশেষ করে শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে রাষ্ট্র পরিচালনায় অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছেন অন্যদিকে এতোদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে বড় বড় বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। তিনি বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর জন্য নেতৃত্ব দিচ্ছেন না তিনি সামগ্রিকভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সমষ্টিগত অর্থনীতির একটা রূপান্তর ঘটেছে। তার একটা বড় কারণ হলো বাংলাদেশের কৃষি খাত নির্ভর অর্থনীতি এখন ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাত অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে। তারপরই অবদান রেমিটেন্স খাতের। রেমিটেন্স খাতের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে রেমিটেন্সটা গ্রামে যাচ্ছে এবং গ্রামের অর্থনীতিকে খুব চাঙ্গা করছে। সেখানে শুধু কৃষি নয় কৃষির বাইরে যেসব খাত আছে যেমন নার্সারি, কোনো দোকান, বেকারি, ট্রান্সপোর্ট, ইজিবাইকসহ ছোট ছোট খাতে এই অর্থ ব্যয় হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১১-১২শ কোটি টাকা শহর থেকে গ্রামে যাচ্ছে শুধু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কারণে এবং এর মধ্যে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে যুক্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে এভাবে শহর থেকে গ্রামে টাকা যাওয়ার ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে। এছাড়া গ্রামে ব্যাংকের শাখা খোলার কারণে ব্যাংকের আশপাশে অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বড় উদ্যোক্তাদের থেকে ছোট উদ্যোক্তা খুব দ্রুতহারে বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রোথ রেটের একট বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যা সেইভাবে বাড়ছে না। যেটা পাকিস্তানের থেকে অর্ধেক। একদিকে অর্থনীতির পরিসর বাড়ছে ৩শ বিলিয়ন ডলারের উপরে অন্যদিকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আছে ফলে অর্থনীতি উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন যেটা দরকার সেটা হচ্ছে উপর থেকে প্রধানমন্ত্রী সুর বেঁধে দিচ্ছেন এই সুরগুলো নিচের দিকে যারা আছেন তাদের ধরতে হবে। এখন একমাত্র চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রত্যেকটা প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের যে অর্থ লাগবে সেই অর্থটা সংগ্রহ করা সেটা রাজস্ব থেকেও হতে পারে বা বন্ড থেকেও হতে পারে। সুতরাং এই জায়গাতে আমাদের বিচক্ষণ হতে হবে এবং সংস্কারের প্রয়োজন হলে সেটাও করতে হবে। সর্বশেষ এই রূপান্তরকে টেকসই করতে হলে আমাদের আর্থিক খাতকে অবশ্যই স্থিতিশীল রাখতে হবে। এ খাতকে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল হতে দেয়া যাবে না।