আরিফুর রহমান : নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় ৩ ঘণ্টা ফেরি বসে থাকায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আশপাশের লোকজনের অনুরোধের পরও কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ছাড়েনি বলে অভিযোগ স্বজনদের। এমনকি প্রতিকার মেলেনি জরুরি নাম্বারে (৯৯৯) ফোন করেও।
রোগীর স্বজন ও ফেরিতে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র তিতাস ঘোষ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ায় প্রথমে ভর্তি হন খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার তাকে নেয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজে। চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখে দ্রুত ঢাকায় পৌঁছাতে অর্ধ লাখ টাকায় ভাড়া করা হয় আইসিইউ সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স। রাত আটটায় মাদারীপুরের কাঠালবাড়ী ১নং ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামের ফেরিটি ঘাটেই ছিলো। কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার গাড়ি না আসা পর্যন্ত ফেরি ছাড়তে রাজি হয়নি ঘাট কর্তৃপক্ষ। কারণ ওই কর্মকর্তার ভিআইপি গাড়ি যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ।
এ অবস্থায় মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে স্বজনরা ফোন করেন জরুরি নাম্বারে (৯৯৯)। সাহায্য চান ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরও। অভিযোগে জানা গেছে, কারো অনুরোধই রাখেননি ঘাট কর্তৃপক্ষ।
প্রায় তিনঘণ্টা পর রাত পৌনে ১১টার দিকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগানো সাদা রংয়ের নোহা মাইক্রোবাসটি আসার পর ফেরি ছাড়ে। ততক্ষণে মস্তিস্কে প্রচুর রক্তক্ষরণে মাঝ নদীতেই মৃত্যু হয় তিতাসের।
তবে ভিআইপি কর্মকর্তার জন্য ফেরি দেরিতে ছাড়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ঘাট কর্তৃপক্ষ ।
স্বজনরা জানান, তিতাস মারা যাওয়ায় আর ঢাকার দিকে না গিয়ে শিমুলিয়াঘাট থেকে বাড়ির দিকে অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে নেন তারা। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান