মাশরুমে সফল ফরিদপুরের সাথী আক্তার
ইয়াছির আরাফাত
মাশরুম মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। ঔষধিগুণে ভরপুর। এটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও সবজি-জাতীয় ফসল। এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামিনো এসিড, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব কারণে এটি সারা দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মাশরুম আমাদের দেশের পুষ্টি সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ফসলটি চাষ করে সফল হয়েছেন ফরিদপুরের সাথী আক্তারসহ অনেক নারী। সাথী আক্তার পড়ালেখার ফাঁকে শুরু করেন মাশরুম চাষ। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় অনেক গৃহিণীই এখন মাশরুম চাষ করছেন, সাফল্যও পেয়েছেন। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন হর্টিকালচার কর্মকর্তারা। ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ টেপাখোলা নিবাসী সাথী আক্তার। সাত বছর ধরে মাশরুম চাষ করে ভাগ্যবদল করেছেন। নিজের আয়ের টাকায় কিনেছেন এক খন্ড জমি। এখন স্বপ্ন ওই জমিতে বাড়ি করার। লেখাপড়ার পাশাপাশি করছেন মাশরুম চাষ। হয়েছেন স্বাবলম্বী। চলতি বছরে স্নাতক পাস করেছেন। সাথীর উৎপাদিত মাশরুম স্থানীয় চায়নিজ হোটেল, সুপারসপসহ শহরের বিভিন্ন হোটেলে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় হর্টিকালচার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়িতে ২০১২ সালে শুরু করেন মাশরুম চাষ। হর্টিকালচার থেকে ১২ টাকা করে বীজ কেনেন। ওই বীজ থেকে একটানা তিন মাস মাশরুম পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি মাসে মাশরুম বিক্রি করে তিনি ছয় থেকে সাত হাজার টাকা আয় করছেন। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা মাশরুম ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজি শুকনো মাশরুম পাউডার এক হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।
সাথী আক্তার বলেন, আমি মাশরুম চাষ করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করেছি। জমিও কিনেছি। এখন বাড়ি করার স্বপ্ন দেখছি। পড়াখোর পাশাপাশি এ ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি। আর এ কাজে সব ময় আমার মা সহযোগিতা করেছেন। আমার সাফল্য দেখে অনেক নারীও শুরু করেছেন মাশরুম চাষ। তারাও লাভবান হচ্ছেন। চাষে খরচ নেই বললেই চলে। সামান্য পরিশ্রম দিয়ে যে কেউ মাসে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা আয় করতে পারেন।
হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, প্রথম দিকে এ জেলার মানুষের মাঝে মাশরুম নিয়ে বিরূপ ধারণা থাকলেও আমরা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছি। ফলে এলাকার অনেকেই এখন মাশরুম চাষে ঝুঁকছেন। এটি শতভাগ হালাল খাবার। চাষিকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আসছি আমরা। এছাড়া চাষের জন্য বিনা মূল্যে র্যাক দিয়েছি অনেককে। এখন অনেকে মাশরুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। চাষে কোনো ঝুঁকি নেই। উপরন্তু মাসে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানালেন এক কর্মকর্তা। শেয়ার বিজ